Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মালদহ কলেজে ভাঙচুর, অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা

পরীক্ষা কেন্দ্রে কড়াকড়ি করায় কলেজে ঢুকে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, টিভি ভেঙে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা সহ একদল ছাত্রের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বেলা দেড়টা নাগাদ মালদহ কলেজে এই ঘটনার পরে পরীক্ষার্থীদের মারমুখী চেহারা দেখে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসঘর থেকে সরে ‘কমন রুম’-এ আশ্রয় নেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। গোলমালের জেরে কালিয়াচক ও গৌড় মহাবিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের এ দিনের ৩টি পত্রের পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

লন্ডভন্ড মালদহ কলেজ। শুক্রবার।

লন্ডভন্ড মালদহ কলেজ। শুক্রবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:২৯
Share: Save:

পরীক্ষা কেন্দ্রে কড়াকড়ি করায় কলেজে ঢুকে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, টিভি ভেঙে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা সহ একদল ছাত্রের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বেলা দেড়টা নাগাদ মালদহ কলেজে এই ঘটনার পরে পরীক্ষার্থীদের মারমুখী চেহারা দেখে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসঘর থেকে সরে ‘কমন রুম’-এ আশ্রয় নেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। গোলমালের জেরে কালিয়াচক ও গৌড় মহাবিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের এ দিনের ৩টি পত্রের পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মালদহ কলেজে ওই পরীক্ষার আসন পড়েছিল ওই দুই কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। মালদহ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অসীম সরকারের অভিযোগ, “কালিয়াচক কলেজের কিছু ছাত্রের নেতৃত্বে ভাঙচুর হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ।” তিনি জানান, পরীক্ষায় টোকাটুকি রুখতে কড়াকড়ি হচ্ছে। এদিনও প্রথমার্ধের পরীক্ষার সময়ে ১৯ জনের খাতা কেড়ে নেওয়া হয়। এই নিয়ে গত ৩০ দিনে ৬৯১ জনের পরীক্ষার্থীর খাতা কেড়ে শাস্তি দেওয়া হল। তাদের মধ্যে অনেকেই কালিয়াচক কলেজের। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সব কথাই জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহের ইন্সপেক্টর অপূর্ব চক্রবর্তী জানান, ওই দুই কলেজের তিনটি পত্রের পরীক্ষা কবে হবে, তা দ্রুতই জানিয়ে দেওয়া হবে।

ঘটনায় অভিযোগের তির কালিয়াচক কলেজের ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা সুশান্ত চৌধুরীর দিকে। এদিন ওই কলেজে বেলা ২টো থেকে দ্বিতীয় বর্ষের সমাজবিদ্যার পঞ্চম পত্রের পরীক্ষায় বসার কথা ছিল সুশান্তর। অভিযোগ, তিনি একদল পরীক্ষার্থীকে নিয়ে বেলা ১টা নাগাদ প্রথমার্ধের পরীক্ষা শেষের ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্লাসে ঢুকে পড়েন। তখন শিক্ষকরা সবে প্রথমার্ধের পরীক্ষার খাতা নিয়ে তা গুণে রাখছেন। তার মধ্যেই পরের অর্ধের পরীক্ষার্থীদের এত তাড়াতাড়ি ক্লাসঘরে ঢোকা নিয়ে শিক্ষকেরা আপত্তি করলে গোলমাল বাঁধে। কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের সন্দেহ, নকল রুখতে কড়াকড়ি হচ্ছে বলে আগেভাগে ঘরে ঢুকে চেয়ারে, বেঞ্চে, দেওয়ালে নানা প্রশ্নের উত্তর লেখার ছক কষেছিল কিছু ছাত্র। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সে সময়ে ছাত্রদের বেরিয়ে যেতে বললে তুলকালাম কাণ্ড শুরু হয়। শুরু হয় ভাঙচুর। অভিযোগ, সুশান্তের নেতৃত্বে ওই ভাঙচুর চলেছে প্রায় ২০ মিনিট ধরে।

শুক্রবার মালদহ কলেজে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে পরীক্ষা দিতে আসা
কালিয়াগঞ্জ কলেজের ছাত্রদের বিরুদ্ধে। কলেজে যান মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী।

তবে সুশান্তের দাবি, “আমি যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকছিলাম, তখন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমাকে বিনা প্ররোচনায় মারধর করেছেন। আমার মোবাইল কেড়ে নেন।” তাঁর বক্তব্য, এর পরে কারা ভাঙচুর করেছে তা তিনি জানেন না। কিন্তু প্রথমার্ধের পরীক্ষা শেষের ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসে ঢোকা কি ঠিক হয়েছে? সুশান্তর যুক্তি, “পরীক্ষা শেষের বেল বাজলে ক্লাসঘরে ঢোকাই যায়।”

তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা নেতৃত্ব ঘটনার নিন্দা করেছেন।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদহ জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “কালিয়াচক কলেজের আমাদের সংগঠনের ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত নিন্দ্যনীয়।” কলেজের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীও জানান, কলেজে ভাঙচুরের ঘটনা সমর্থন করা যায় না।

—নিজস্ব চিত্র।

অন্য বিষয়গুলি:

malda college tmcp leader rampage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE