দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যই এবারের শিলিগুড়ির অধিকাংশ পুজোর ‘ট্রাম্প কার্ড’। শহরের সিংহভাগ বড় পুজো উদ্যোক্তা রাই এবারে ঝুঁকেছেন দেশের বিভিন্ন সুপরিচিত বিষয়বস্তুর দিকেই। সেই মতনই সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপগুলিকে। শিলিগুড়ির উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই একই ছবি। সেন্ট্রাল কলোনি, অরুণোদয় সঙ্ঘ, উজ্জ্বল সঙ্ঘ, উইনার্স ক্লাব, মিলনপল্লি সার্বজনীন, সারদা সেবক সঙ্ঘ, মায়াদেবী ক্লাব, হায়দরপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব তো বটেই রবীন্দ্র সঙ্ঘ, অরবিন্দ যুবক সঙ্ঘ, রথখোলা স্পোর্টিং ক্লাব থেকে উপকার অ্যাথলেটিক ক্লাব বা নবাঙ্কুর সঙ্ঘ কিংবা অগ্রণী সঙ্ঘতেও এবারের পুজোর মূল থিম সাবেকি রীতি। মণ্ডপ থেকে আলোকসজ্জা সবেতেই পুরানো ঐতিহ্যের ছোঁয়া। তবে গোটাটাই কাকতালীয় বলে মনে করছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
শিলিগুড়ির সেন্ট্রাল কলোনি পুজো কমিটির এবারের থিম ‘লোকশিল্পের আধুনিকীকরণ’। দক্ষিণ ভারতীয় রীতিতে তৈরি পুজো মণ্ডপে ফাইবার ও বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন লোকশিল্পকে তুলে ধরা হবে মডেলের মাধ্যমে। পুজো কমিটির সম্পাদক পার্থ দে বলেছেন, “আমরা পুজোতে বরাবরই ভারতীয় বিভিন্ন সংস্কৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করি। এবারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে শহরের বাকি পুজোর কথা বলতে পারব না।” প্রতি বছর দেবীকে কেন্দ্র করেই পুজোর মণ্ডপকে সাজান অরবিন্দ যুবক সঙ্ঘের উদোক্তারা। পুজো কমিটির চেয়ারম্যান বিজয় শর্মা জানান, গতবার শিউলি ফুলের মাঝে দেবীকে সাজানো হয়েছিল। এবারও রামায়ণের জনশ্রুতিকে কাজে লাগিয়েই পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি ভাল লাগবে।
বিভিন্ন জনশ্রুতি ও বিখ্যাত ভবনকে তুলে ধরার প্রবণতা রয়েছে মাটিগাড়ার মায়াদেবী ক্লাবের। গতবার কুবেরের রাজপ্রাসাদের পর এবার থিম গুজরাতের অক্ষরধাম মন্দির। মূল মন্দিরের গোটা আদলটাই হুবহু তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানালেন পুজো কমিটির চেয়ারম্যান মদন ভট্টাচার্য। বিগ বাজেটের পাশাপাশি ঐতিহাসিক মূল্যকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবারের বিভিন্ন পুজোয়। হায়দরপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের থিম কেরলের কথাকলি নৃত্য। নৃত্যের বিভিন্ন মুদ্রাকে মণ্ডপে দেখানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চলছে জোর কদমে কাজও।
সারদা সেবক সঙ্ঘ আবার গোটা বাউল গ্রামকেই তুলে ধরছে পুজোর মণ্ডপে। সেখানে একতারা নিয়ে গান করবে বাউল সম্প্রদায়। দর্শকদের অন্যরকম মেজাজ এনে দিতে এই আয়োজন বলে জানান পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা দীপক শীল। বিধানরোড লাগোয়া উপকার অ্যাথলেটিক ক্লাবের ডাকের সাজের প্রতিমাও দশর্কদের চোখ টানবে বলে আশা উদ্যোক্তাদের। অন্যদিকে, রবীন্দ্র সঙ্ঘের পুজোয় কুটির শিল্পীরা ক্লাব চত্বরেই বসে বানাচ্ছেন মণ্ডপ তৈরির উপকরণ। পুজোয় ঘরোয়া ঐতিহ্যের সঙ্গে ভারতীয় শৈলির দিকে ঝোঁকায় খুশি বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy