Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বড়দিনে খুশি ভরা দার্জিলিং

বড়দিনের উত্‌সবের আনন্দে মেতে উঠলেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তা থেকে বিভিন্ন চার্চ, নানা রেঁস্তোরা থেকে হোটেল, সর্বত্র বৃহস্পতিবার উত্‌সবের মেজাজ চোখে পড়েছে। কনকনে শীতের আমেজ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সঙ্গে রকমারি খাবার।

দার্জিলিঙের ম্যালে ভিড়। বৃহস্পতিবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।

দার্জিলিঙের ম্যালে ভিড়। বৃহস্পতিবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।

রেজা প্রধান
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩৯
Share: Save:

বড়দিনের উত্‌সবের আনন্দে মেতে উঠলেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তা থেকে বিভিন্ন চার্চ, নানা রেঁস্তোরা থেকে হোটেল, সর্বত্র বৃহস্পতিবার উত্‌সবের মেজাজ চোখে পড়েছে। কনকনে শীতের আমেজ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সঙ্গে রকমারি খাবার। এই তিন দিনে শৈলশহরে তিলধারণের জায়গাটুকু ছিল না। এ দিন থেকেই নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ অবধি বেশিরভাগ হোটেলের ঘর বুকিং হয়ে রয়েছে।

প্রতিবারের মতই এবারও বড় দিনে নজর কেড়েছে গ্লেনারিজ রেঁস্তোরা ও বেকারি। সকাল থেকে লাইন দিয়ে রেঁস্তোরায় ঢুকতে দেখা গিয়েছে দেশ বিদেশের পর্যটকদের। বাদ যাননি স্থানীয় বাসিন্দারাও। সংস্থার বাইরে ঝোলানো সান্তাক্লজকে ঘিরে ছবি তোলার হুড়োহুড়ি ছিল চোখে পড়ার মত। নেহেরু রোডের গ্লেনারিজের অন্যতম কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ড বলেন, “পর্যটকেরাও শীতের দার্জিলিংকে বড়দিন থেকে উপভোগ করা শুরু করেছেন। রেঁস্তোরায় বসার জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। কেক, চকোলেট, বিস্কুটের-মত বেকারির জিনিসপত্র আমরা সরবরাহ করে শেষ করতে পারিনি।”

শহরের অধিকাংশ হোটেল এবং রেঁস্তোরা মালিকেরা জানিয়েছেন, এই সময় পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী কিছু খাবার তৈরি করা হয়। রোস্ট চিকেন, বিভিন্ন রকমের স্যুপ, পাই, নানা স্বাদের কেক, পুডিং তৈরি করা হয়। এ ছাড়া ব্র্যান্ডিতে ভেজানো সুস্বাদু ড্রাইফ্রুট তো রয়েছেই। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় প্লাম কেক। কোনও কোনও দোকানে হাজারেরও বেশি প্লামকেক বিক্রি হয়েছে। গভীর রাত অবধি কেকের চাহিদা থাকে। তবে কয়েক বছর আগে এমনটা ছিল না। পাহাড় ‘শান্ত’ থাকায় শীতের পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

ডুয়ার্সে মূর্তি নদীর ধারে পিকনিক বড়ি দনে।

বুধবার গভীর রাত থেকে ক্যারল শোনার জন্য স্থানীয় চার্চগুলিতে পর্যটকদের দেখা দিয়েছে। তাঁদের অনেকেই শহরের নানা চার্চে ক্যারলে যোগদানকারী দলগুলির সঙ্গে গানবাজনাও করেন। বহু জায়গায় চলেছে ক্যাম্প ফায়ার ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। হোটেলগুলিতেও সন্ধ্যার পর আবাসিকদের জন্য এমনই নানা ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

চৌরাস্তা লাগোয়া এলগিন হোটেলের ম্যানেজার বাদল মজুমদার বলেন, “চলতি সপ্তাহে থেকে গোটা হোটেলের ২৫টি ঘর বুকিং রয়েছে। আগামী ৩ জানুয়ারি অবধি এই অবস্থা রয়েছে। শুধু দেশ নয়, বিদেশের পর্যটকেরাও পাহাড়ে ভরে রয়েছে।” তিনি জানান, বড়দিনের জন্য আমরা বিশেষ কিছু ব্যবস্থাও করে রেখেছি। নাচগানের অনুষ্ঠান, বন ফায়ার চলছে। সঙ্গে স্টাফড ডাক, রোস্ট ল্যাম্ব এবং স্টিমড ফিস স্যালাড।

বিন্নাগুড়ির একটি চার্চের সামনে ভিড়।

পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকেরা এই সময় দার্জিলিঙে বেশি থাকেন। স্কুল কলেজে ছুটি থাকায় ভিড় আরও বাড়ে। দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস-র সভাপতি প্রদীপ লামা বলেন, “অনেকেই এই সময় পাহাড়ে আসেন তুষারপাত দেখার আশা নিয়ে। সেই সঙ্গে বড়দিন, নতুন বছরের আনন্দ উপভোগ করে যান।”

বড়দিনের সকাল থেকে শৈলশহরের বিখ্যাত ম্যাল চৌরাস্তায় বসার জায়গা তো দূরের কথা, অনেক সময় দাঁড়ানোর অবস্থা ছিল না। কেউ ঘোড়ায় চড়ে, কেউ ছবি তুলে আবার কেউ রেঁস্তোরাগুলিতে গরম চা-কফিতে চুমুক দিয়ে সময় কাটিয়েছেন।

কলকাতার বাসিন্দা মলয়কুমার মণ্ডল বলেন, “বড়দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দার্জিলিঙে এলাম। গোটা পরিবার নিয়ে আগের বার যেভাবে দার্জিলিঙে বড় দিন কাটিয়ে গিয়েছিলাম, তা ভুলতে পারিনি। সেই টানেই ফের এবার দার্জিলিঙে। দিনভর চৌরাস্তা, শহরের রাস্তা ঘুরেছি। দারুণ অভিজ্ঞতা।”

বৃহস্পতিবার দীপঙ্কর ঘটক ও রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।

অন্য বিষয়গুলি:

reja pradhan darjeeling christmas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE