গরমে ময়নাগুড়ি শহরে এই চিত্র নিত্যদিনের। —নিজস্ব চিত্র।
দাবদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জলকষ্ট। শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে কুয়ো। নলকূপে জল উঠছে না। জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুরসভার কলে টিপটিপ করে পড়া জল সংগ্রহ করতে ভিড় উপচে পড়ছে প্রতিদিনই। বাসিন্দারা জানান, বাড়ির ট্যাঙ্কে জল উঠছে না। কলে এতটাই ঘোলা জল পড়ছে যে কাপড় দিয়ে ছেকে তবেই তা ব্যবহার করা হচ্ছে। একই ছবি ময়নাগুড়ি শহরে বিভিন্ন পাড়ায়। শুরু হয়েছে জলের হাহাকার।
বেড়ে চলা পানীয় জলকষ্টের পরিস্থিতির কথা অস্বীকার করেননি জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলপাইগুড়ির নির্বাহী বাস্তুকার সঞ্জয় কুমার। চেয়ারম্যান মোহনবাবু বলেন, “পুরসভার ১৯টি পাম্প থেকে ৫টি জলাধারে জল তুলে তা সরবরাহ করা হয়। গরমকালে জলস্তর এতটাই নেমে যায়, যে পর্যাপ্ত জল জলাধারে তোলা সম্ভব হয় না। এবারও একই সমস্যা শুরু হয়েছে। ওই কারণে সরবরাহ করা জলের গতি কমেছে। তার উপরে একটি পাম্প খারাপ থাকায় সমস্যা বেড়েছে।” এদিকে ময়নাগুড়ি শহর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সঞ্জয়বাবু জানান, নতুন পাম্প না বসানো পর্যন্ত ময়নাগুড়ি শহরে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত ওই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার রেসকোর্স পাড়া, নয়াবস্তি, আদরপাড়া, পাণ্ডা পাড়া, সেনপাড়া, দিনবাজার, নেতাজি পাড়া, রায়কত পাড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জল সঙ্কট রয়েছে। রেসকোর্স পাড়ার গৃহবধূ সুপ্রীতি সান্যাল বলেন, “আট থেকে নয় ফুট উচুতে রাখা ট্যাঙ্কে জল উঠছে না। রাস্তার কল থেকে জল টেনে আনতে হচ্ছে।” একই অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা শর্মিলা চক্রবর্তী, সুব্রত ঝম্পটি। নয়াবস্তির বাসিন্দা চপল সরকার জানান, জলের গতি এতটাই কম যে ট্যাঙ্ক ভরছে না। কুয়োর জল নিচে যাওয়ায় পাম্প দিয়ে জল তোলা যাচ্ছে না। দিনবাজার ও রায়কতপাড়ার কিছু অংশে সমস্যা বেড়েছে। নেতাজিপাড়া এলাকায় পুরসভার কলে আয়রন মিশ্রিত জল বার হচ্ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ১২৯ বছরের পুরানো পুরসভার অনেক কিছুই নতুন করে সাজানো দরকার। তার মধ্যে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা অন্যতম। রাজ্য সরকারের কাছে একটি প্রকল্প ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ময়নাগুড়ির সুভাষনগর, দেবীনগর, আনন্দনগর, ময়নামাপাড়া, শহিদগড়, হাসপাতালপাড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কলে পর্যাপ্ত জল না মেলায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার বলেন, “ময়নাগুড়িতে ১৯৭৩ সালে পানীয় জল সরবরাহ শুরু হয়। ওই সময় যে জনসংখ্যা ছিল তা তিন গুণ হয়েছে। জল সরবরাহের পরিকাঠামো পাল্টায়নি। তাতে সমস্যা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy