আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এই সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। —ফাইল চিত্র।
আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আট থেকে আশি, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্কুলপড়ুয়ারা যাতে স্কুলের বাইরের কোনও কর্মসূচিতে যোগ না দেয়, সেই মর্মে নির্দেশিকা জারি হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন, স্কুলপড়ুয়ারা যাতে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে না পারে, তার জন্যই এই নির্দেশিকা জারি করা হল?
বৃহস্পতিবার জেলার সরকারি স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের উদ্দেশে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডিআই (মাধ্যমিক) স্বপন সামন্ত। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তবে জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক জানিয়েছেন যে, তাঁরা ওই মর্মে ইমেল পেয়েছেন। ডিআই-এর ইমেলে বলা হয়েছে, স্কুল চত্বরের বাইরে স্কুলশিক্ষা দফতরের অনুষ্ঠান বাদে অন্য কোনও কর্মসূচিতে যাতে পড়ুয়ারা অংশ না নেয়। এর অন্যথা হলে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের।
কিন্তু এই নির্দেশিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন এবং বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, স্কুলের বাইরে পড়ুয়ারা কী করবে, কোথায় যাবে, কোন অনুষ্ঠানে থাকবে, তা নিয়ে কী ভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে স্কুল? নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক শালবনির এক প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলের বাইরে ছেলেমেয়েরা কী করবে, এটা নিয়ে আমরা কী বলতে পারি? বাড়িতে ওদের বাবা-মা আছেন। সেখানে তাঁদের কথা শুনে চলে ওরা। কে কোথায় যাবে, না-যাবে, আমরা কী ভাবে তার খোঁজ রাখব?’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছিল। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল তাদের। ঘটনাচক্রে, তার পরেই প্রকাশ্যে আসে এই নির্দেশিকা। অনেকের দাবি, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে ‘ক্ষোভ’ যে সমাজের সর্ব স্তরেই ছড়িয়ে পড়েছে এবং তার থেকে স্কুলপড়ুয়ারাও যে বাদ যায়নি, এই সরকারি নির্দেশিকাতেই তা স্পষ্ট। স্কুলপড়ুয়ারাও প্রতিবাদ-মিছিলে হেঁটে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুখ খুলুক, তা চাইছে না সরকার। সেই কারণেই এই পদক্ষেপ বলে ধারণা অনেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy