— প্রতীকী চিত্র।
ভোটার তালিকা সংশোধনের ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বানান ভিন্ন হলেও, একই নাম-পদবির বা কার্যত এক ছবির একাধিক কার্ডের উপস্থিতি থাকা ভোটারদের চিহ্নিত করে ভুয়ো নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিল দিল্লির নির্বাচন সদন। যার কাজ চালু রয়েছে। এই অবস্থায় ধৃত জঙ্গি মহম্মদ শাদ রাডি ওরফে শাব শেখের নাম ভোটার তালিকায় থাকা নিয়ে কমিশনের অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশেরই প্রশ্ন— তবে কি ভুয়ো পিতৃ বা আত্মীয় পরিচয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে সফল হয়েছিল শাব? এখানেই নিচুতলার কর্মী-আধিকারিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন কমিশন কর্তাদের অনেকেই।
গত লোকসভা ভোটের আগে ‘ভুয়ো’ এবং মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছিল কমিশন। তারা লক্ষ্য করেছিল, গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও ভোটার তালিকায় এক নাম-পদবির (বানান ভিন্ন) একাধিক কার্ড (ডেমোগ্রাফিক সিমিলার এন্ট্রি বা ডিএসই) রয়েছে। আবার এমন ভোটারও রয়েছেন, যাঁদের ছবি কার্যত এক (ফটো সিমিলার এন্ট্রি বা পিএসই)। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ভোটারেরা চাইলেই একাধিক ভোট দিতে পারেন। অবশ্য, কমিশনের এক কর্তার কথায়, “পিএসই-র ক্ষেত্রে ভুয়ো কার্ড ধরে ফেলা খুব সহজ। কারণ, সেখানে ছবি থাকে। ডিএসই-র ক্ষেত্রে তা তুলনায় কঠিন। তবে এই দুই গোত্রের ভুয়ো নাম বাদ গিয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।”
সূত্রের দাবি, একাধিক জায়গার ভোটার তালিকায় জায়গা পেয়েছিল ধৃত জঙ্গি। যদিও, প্রতি বছরের মতো এ বারেও দেশে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হচ্ছে নভেম্বর থেকে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ পাবে সংশোধিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে ভোটার তালিকায় ধৃত জঙ্গির নাম উঠল কী ভাবে!
কমিশন-বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় নাম তোলায় ১৮-১৯ বছর বয়সিদের নিয়ে তেমন সন্দেহ তৈরি হয় না। কিন্তু ২৫-৩০ বছর বয়সি আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে কমিশনের কর্মী-আধিকারিকেরা দেখেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাবা বা নিকটাত্মীয় কে এ দেশের কোথায় রয়েছেন। প্রবীণ কমিশন-আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই পর্বে কোনও ব্যক্তি কাউকে নিজের বাবা বলে পরিচয় দিতেই পারেন। আবার কেউ অন্য আত্মীয়ের তথ্যও জানান। তখন আবেদনকারীর উল্লেখ করা আত্মীয়ের ভোটার কার্ডের নথি জমা নেয় কমিশন। সেটার এবং অন্যান্য কিছু নথির ভিত্তিতে শুনানি করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার প্রক্রিয়া হয়। পরে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় নিজের দেওয়া আগের তথ্য সংশোধন করাতেই পারেন সেই ব্যক্তি। শাবের ক্ষেত্রে ‘ভুয়ো’ আত্মীয়ের উপস্থিতি ছিল কি না, সেই চর্চাই চলছে। প্রশ্ন উঠছে, নাম তোলার সময়ের পদ্ধতি আঁটোসাটো কি করা যায় না!
কমিশনের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় নাম ওঠার সময় তাঁরা যে নথি পাচ্ছেন, সেটার ভিত্তিতেই পুরো কাজ করেন ইলেক্টোরাল রিটার্নিং অফিসারেরা (এআরও)। কিন্তু আবেদনকারী আদৌ ভারতীয় নাগরিক কি না, সেই যাচাইয়ে ক্ষমতা সরাসরি তাঁদের থাকে না। তবে পরে ভোটার সম্পর্কিত কোনও অভিযোগ এলে কমিশন পদক্ষেপ করে। এক কর্তার কথায়, “কেন্দ্র বা পুলিশ মাঝেমধ্যেই ভোটার ৎতালিকায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অস্তিত্বের কথা জানায়। তখন কমিশন সংশ্লিষ্ট নামগুলি বাদ দেয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ধৃত বা সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তির ভোটার কার্ডটিই জাল, যার তথ্য কমিশনের খাতায় নেই।”
কমিশন সূত্রে দাবি, যত দিন এগোচ্ছে, তত মজবুত হচ্ছে তালিকা সংশোধনের পদ্ধতি। আগে কারও ঠিকানা বদল হলে বহু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টের নাম আগের ঠিকানাতেও থেকে যেত। কিন্তু এখনকার ব্যবস্থায় ঠিকানা বদল করলে পুরনো ঠিকানা থেকে সংশ্লিষ্টের নাম বাদ চলে যাবে। অভিজ্ঞ কর্তাদের অনেকের বক্তব্য, “তাই, এ ক্ষেত্রে যাঁরা নথি জোগাড়ে সহযোগিতা করছেন, তাঁদের দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy