Advertisement
০৯ জানুয়ারি ২০২৫

প্রতিবাদে তৃণমূল-সঙ্গ নয়, বোঝাল সিপিএম

স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নেমে পরপর তিন দিন নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদ করছেন।

নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত বামেদের মিছিল। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত বামেদের মিছিল। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৩
Share: Save:

নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে পথে নেমেছে দু’পক্ষই। কিন্তু বিজেপি সরকারের ওই পদক্ষেপের বিরোধিতায় তৃণমূলের হাত ধরতে তারা আগ্রহী নয় বলেই স্পষ্ট করে দিল সিপিএম। তাদের যুক্তি, বাম ও কংগ্রেসের দল ভাঙিয়ে, নির্বাচিত বোর্ড দখল করে রাজ্যে বিজেপির উত্থানের বাতাবরণ যারা তৈরি করেছে, তাদের সঙ্গে হাত বা পা মিলিয়ে সাম্প্রদায়িকতার প্রতিবাদ কি ভাবে সম্ভব! বামেরা নিজেরাই কলকাতায় কাল, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মিছিলের ডাক দিয়েছে।

স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নেমে পরপর তিন দিন নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা ‘নো এনআরসি, নো ক্যাব’ ব্যাজ পরে মিছিলে হাঁটছেন। অন্য রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রী— সকলকেই ওই ব্যাজ পরার জন্য মঙ্গলবার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। বিশেষ পরিস্থিতিতে বাম নেতা-কর্মীরাও কি একসঙ্গে মিছিল করতে পারেন না? সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের জবাব, ‘‘গণতন্ত্রকে শেষ করে তার কবরে ধর্মনিরপেক্ষতার চিরাগ জ্বালা যায় না! আবার ধর্মনিরপেক্ষতাকে চিতায় তুলে গণতন্ত্রের প্রদীপ জ্বালতে চাইলে সেটাও হয় না।’’

সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, কংগ্রেস ও বামেদের হাত থেকে জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত ও পুরসভা ছিনিয়ে নেওয়া, দু’পক্ষের বিধায়ক ভাঙানোর ঘটনায় রাজ্যে ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী পক্ষের পরিসর সঙ্কুচিত হয়েছে। তৃণমূলের রাজনীতির দৌলতে মাথা তুলেছে বিজেপি। তাই বিজেপির রাজনীতির প্রতিবাদ বামেরা নিজেদের মতো করে এবং কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে করতে চায়। কেরলে শাসক বাম জোট এবং বিরোধী কংগ্রেস ফ্রন্টের নেতারা একত্রে প্রতিবাদ করেছেন বলে বাংলার সমীকরণ নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠছে। সিপিএম নেতারা বলছেন, কেরলে বাম ও কংগ্রেসের বিরোধ পুরোদস্তুর রাজনৈতিক। দল ভাঙানো, পরিসর দখল বা মেরুকরণের রাজনীতিকে মদত দেওয়ার অভিযোগ সেখানে পরস্পরের বিরুদ্ধে নেই। কিছু দিন আগে এ রাজ্যে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি-বিরোধিতায় বাম ও কংগ্রেসকে পাশে নেওয়ার কথা বলার পর দিনই যে শাসক পক্ষ বিবৃতি দিয়ে অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তা-ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন বাম নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: মমতার প্রশ্ন, আমরা কারা? ভিড় বলল ‘নাগরিক’

দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদের অঙ্গ হিসেবে কাল মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিলে সব দল-মতের সমর্থক মানুষকেই শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সিপিএম। তবে ১৭ বাম দলের মিছিলে এ বারও কংগ্রেসকে ডাকা হচ্ছে না। একই দিনে একই বিষয়ে ‘সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ কর্মসূচিতে প্রদেশ কংগ্রেস ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের সামনে থেকে রাম মন্দির পর্যন্ত মিছিল করবে। প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিন কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে। পরে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আলাদা মিছিল মানেই ভুল বোঝাবুঝি নয়। নিজস্ব কর্মসূচি থাকবেই। শীঘ্রই আমরা ফের আলোচনা করে যৌথ কর্মসূচি নেব।’’

সেলিম এ দিন দাবি করেছেন, জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জির (এনপিআর) প্রস্তুতির কাজ স্থগিত নয়, পুরোপুরি বাতিলের ঘোষণা করতে হবে রাজ্য সরকাররকে। সেই সঙ্গেই জানাতে হবে, ডিটেনশন সেন্টারের জন্য জমি দেওয়া বা অন্য কোনও ভাবেই রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করবে না। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিনই ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মশাল মিছিল করেছে বাম যুব ও ছাত্র সংগঠনগুলি।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC CPM NRC CAA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy