কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের অবস্থান যদি এক না হয়, তবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে ভেঙে দেওয়া হোক। উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, ১৯ মের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্য আদালতকে জানাচ্ছে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বঞ্চিতদের নিয়োগ করতে এই শূন্যপদ। এর ঠিক উল্টো পথে গিয়ে কমিশন জানাচ্ছে, অবৈধ ভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন এবং যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের জন্য এই শূন্যপদ। বিচারপতির প্রশ্ন, “কোনটা ঠিক? দু’পক্ষের মতামত পরস্পরবিরোধী। এটা কী ভাবে সম্ভব?”
আদালতের পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষিতে কমিশনের আইনজীবী সুতনু পাত্র জানান, অনেকেই ৩-৪ বছর ধরে চাকরি করছেন। তাঁদের পরিবার রয়েছে, সে কথা ভেবেই আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “বুধবার এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই অংশ প্রত্যাহার করার কথা ভাবা হচ্ছে।”
বিচারপতির পাল্টা মন্তব্য, “মাথায় রাখবেন, এটা শিক্ষক পদের চাকরি। এঁদের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন পড়ুয়ারা। আর কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। রাজ্যও না, কমিশন কেউ না! এঁরা অন্য কোথাও কাজ করতে পারেন, কিন্তু শিক্ষক হিসেবে কোনও ভাবেই নয়।”
মঙ্গলবারই উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। দু’দিনের জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। মঙ্গলবার হাই কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছিল, কোনও চাকরিপ্রার্থীকে সুপারিশপত্র দিতে পারবে না এসএসসি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। পরে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুধু মাত্র কর্মশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের মার্চে ইন্টারভিউ (পার্সোনালিটি টেস্ট) হয়। চলতি বছরের অক্টোবরে শারীরিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি। তার পরেই একটি মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। মামলাকারী তথা চাকরিপ্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, গত ৩ নভেম্বর কর্মশিক্ষা বিষয়ে যে ‘ওয়েটিং লিস্ট’ প্রকাশ করে এসএসসি, তাতে তাঁর নাম নেই। তিনি তফসিলি জাতিভুক্ত। পরীক্ষা এবং পার্সোনালিটি টেস্ট মিলিয়ে ৭২ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু ‘অ্যাকাডেমিক স্কোরে’ ২২-এর পরিবর্তে তাঁকে ১৮ নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সোমা।
হাই কোর্টে সোমা দাবি করেন, তিনি লিখিত পরীক্ষায় ৫৪ পেয়েছেন। অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২ পাওয়ার পর তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৭৬ হওয়ার কথা। কিন্তু তাঁকে দেওয়া হয়েছে ৭২ নম্বর। পাশাপাশি পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বরও যোগ করা হয়নি!
এ নিয়ে সোমার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, এসএসসি-র ওই তালিকায় এমন ৬০ জন চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাঁদের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর তাঁদের মক্কেলের থেকে কম। মঙ্গলবার শুনানিতে বিচারপতি বসু ওই ৬০ জনকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy