Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Scam

বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? রঞ্জন-রহস্য সমাধানে অভিযোগই জানতে চায় না কোনও দল

রঞ্জনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই এ নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। তার পরেও কেন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে এগোচ্ছে না পুলিশ?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৬:৩৬
Share: Save:

টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়া ‘রঞ্জন’-এর 'কীর্তি' অজানা নয় এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের। প্রকাশ্যে সে কথা তাঁরা স্বীকারও করছেন। বনগাঁ-বাগদা এলাকার মানুষও চাইছেন, এই চক্রের কার্যকলাপ সামনে আসুক। কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে কার্যত রাজি নয় কোনও রাজনৈতিক দলই। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে তদন্তে নামতে রাজি নয় পুলিশ-ও।

রঞ্জনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই এ নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। তার পরেও কেন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে এগোচ্ছে না পুলিশ? বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদারকে এ প্রশ্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শাসকদল না চাইলে পুলিশ এ ব্যাপারে বাড়তি তৎপরতা দেখাবে না। তবে লিখিত অভিযোগ এলে তদন্ত শুরু হতে পারে। কিন্তু লিখিত অভিযোগ করবে কে? এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাবও কার্যত গা-ছাড়া। যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পাননি বলে এদিক-ওদিক বলে বেড়াচ্ছেন, সামনে আসতে চান না তাঁরাও।

সম্প্রতি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের একটি পুরনো ভিডিয়ো সামনে এসেছে। সেখানেই ‘রঞ্জন’-এর কথা বলেছিলেন উপেন। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে বহু চাকরিপ্রার্থীকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছে এই ‘রঞ্জন’ (আনন্দবাজার অবশ্য ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে ভিডিয়োটি যে তাঁরই, তা অস্বীকার করছেন না উপেনবাবু।) রঞ্জনের প্রকৃত নাম-ধাম প্রকাশ করেননি প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে বিষয়টি নিয়ে সংবাদপত্রে লেখালেখি হতেই বিবৃতি দিয়েছেন স্থানীয় অনেক নেতাই। অনেকেরই দাবি, রঞ্জনের প্রকৃত পরিচয় ও কার্যকলাপ সম্পর্কে ভালই জানেন তাঁরা।

রঞ্জন যদি টাকা নিয়ে বহু লোককে চাকরি দিয়েই থাকেন এবং বর্তমানে একাধিক ব্যক্তি টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কেন লিখিত অভিযোগ করা হচ্ছে না? এত বছরই বা সকলে সব জেনেও কেন চুপ করে ছিলেন? সকলেই হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। হাইকোর্টের নির্দেশ তো হালের ব্যাপার। আগেও কেন কেউ অভিযোগ করেননি? সদুত্তর মেলেনি।

বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার বক্তব্য, “শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি হাই কোর্ট দেখছে। আমরা তো সরাসরি সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করতে পারি না। তা ছাড়া পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ নেই।” বাগদার বিধায়ক তৃণমূলের বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, “বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে নতুন করে অভিযোগ করার দরকার নেই।” বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। তাই রঞ্জনের বিরুদ্ধে আর আলাদা করে বলার কী আছে?” বাম শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র বনগাঁ মহকুমা সম্পাদক পীযূষকান্তি সাহা বলেন, “ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করলেও দিন কয়েক আমরা শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্ত চেয়েছি। আলাদা করে লিখিত অভিযোগ করার প্রয়োজন নেই।”

বনগাঁ শহর কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সাধন ঘোষ অবশ্য বলেন, “ওই ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে বহু মানুষকে চাকরি দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনার তদন্ত চেয়ে সিবিআইকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছি।” আর সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য, “শিক্ষাসংক্রান্ত এসএসসির সমস্ত মামলা হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। ওই ঘটনা আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ করা হলে তা তদন্ত করবে সিবিআই। আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোনও বিষয়ে তদন্ত করতে সিবিআই আগ্রহী নয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Scam TMC CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy