আদালতের পথে ধৃতরা। —নিজস্ব চিত্র।
সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানে পুলিশের ‘হামলা’র প্রতিবাদ মিছিল ঘিরেও উত্তেজনা ও ধস্তাধস্তি বাধল। নবান্ন অভিযান করতে গিয়ে ধৃত ২২ জন বাম কর্মীর জামিন শনিবার না-মঞ্জুর হয়েছে হাওড়া আদালতে। দুই মহিলা-সহ ওই ২২ জন বাম যুব ও ছাত্রকে দু’দিনের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শিয়ালদহ আদালত চত্বরে দেখা গিয়েছে বাম মিছিলের সঙ্গে পুলিশের বচসা, ব্যারিকেড ভাঙার দৃশ্য। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ১২টি বাম যুব ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদ মিছিলে সহমর্মিতা জানাতে এ দিন যোগ দিয়েছিল যুব কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদও।
নবান্ন যাওয়ার পথে মল্লিক ফটকে শুক্রবার বাম মিছিলের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বেধেছিল। ওই ঘটনায় ধৃত ২২ জনকে এ দিন আদালতে তোলার আগে গোটা এলাকা বিশাল বাহিনী দিয়ে মুড়ে ফেলেছিল পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাথর ছোঁড়া, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে হামলা, এমনকি, খুনের চেষ্টা— বহু অভিযোগেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। ধৃত ২২ জনের মধ্যে আছেন এসএফআই কর্মী দুই ছাত্রী। মোট ২২ জনের মধ্যে ২১ জন ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআইয়ের, এক জন ছাত্র ব্লকের। বিচারক তাঁদের দু’দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী মিহির বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। সোমবার ফের জামিনের আবেদন করা হবে।’’ ধৃতদের ফের আদালতে তোলার দিন, সোমবার হাওড়া আদালত চত্বরে জমায়েতের ডাক দিয়েছে বাম যুব ও ছাত্রেরা।
পুলিশি আচরণের প্রতিবাদে গোটা রাজ্যেই এ দিন নানা কর্মসূচি নিয়েছিল বামেরা। অন্যান্য রাজ্যেও প্রতিবাদে নেমেছিল এসএফআই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘এই ঘটনা আরও এক বার প্রমাণ করে দিল যে, এ রাজ্যের সাধারণ মানুষ ও বিরোধী দলগুলোর গণতান্ত্রিক কণ্ঠ রুদ্ধ করে দিতে উদ্যত হয়েছে এ রাজ্যের সরকার। যে সব বামপন্থী ছাত্র-যুবকর্মী গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন, এ লড়াইয়ে আমরা তাঁদের পাশে আছি’। তার পরে এ দিন প্রদেশ যুব কংগ্রেসে সহ-সভাপতি রোহন মিত্রের নেতৃত্বে বাম যুব ও ছাত্রদের ধিক্কার মিছিলে যোগ দেন যুব কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধিরা।
বাম যুব ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদ মিছিল। শনিবার এজেসি বোস রোডে। —নিজস্ব চিত্র।
হামলাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং যুব-ছাত্রদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁরা প্রতিবাদ সভা করবেন বলে জানিয়েছেন ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী। পুলিশের আচরণের নিন্দা করেছেন সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষও। প্রতিবাদ মিছিল ঘিরেও এ দিন এক প্রস্ত অশান্তি বাধে। পুলিশের অনুরোধে ধর্মতলার দিকে না গিয়ে এন্টালি থেকে শিয়ালদহে যায় প্রতিবাদ মিছিল। কিন্তু স্টেশন চত্বরে শিয়ালদহ আদালতের দিকে ঢোকার সময়ে পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে আটকাতে চাইলে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বাম যুব-ছাত্রেরা। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্রের হুঁশিয়ারি, ‘‘ধিক্কার মিছিলেও যা হল, এই মনোভাব না বদলালে এ বার থেকে পুলিশের প্রতি সম্পূর্ণ অসহযোগিতার পথে যেতে হবে আমাদের!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy