প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও নানা মত বিভিন্ন শিবিরে। ফাইল চিত্র
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হল গেরুয়া শিবিরে। রাজীবের দলত্যাগ নিয়ে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ নেটমাধ্যমে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। রবিবার রাতে দিলীপ লেখেন, ‘অনেক দালাল নির্বাচনের আগে আমাদের দলে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিছুজন গিয়েছেন, কিছু এখন রয়েছেন। তাঁরা উৎপাত করছেন। সবাইকে বাদ দেব। এরা চায় না বিজেপি শক্তিশালী হোক।’
দিলীপের পোস্টে কারও নাম নেই। তবে এই পোস্ট নিয়ে কালক্ষেপ না-করে আসরে নেমেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “এটা শুভেন্দু অধিকারীকে লেখা দিলীপ ঘোষের চিঠি। জবাব কী হয়, তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।”
দিলীপ রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে অনেক মন্তব্যের জন্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধমক খেয়েছেন। সেই সময়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর বিরোধও প্রকাশ্যে এসেছে। দিলীপকে না জানিয়ে শুভেন্দুর দিল্লি সফর নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। দিল্লিতে দলের সভাপতি জেপি নড্ডা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহদের সঙ্গে দিল্লিতে শুভেন্দুর বৈঠক হলেও রাজ্য সভাপতি হিসেবে তিনি কিছুই জানেন না বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, তখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে ঘোষ-অধিকারী দূরত্ব কমে। তবে এখন দিলীপ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অংশ। সেই প্রেক্ষিতে রবিবারের মন্তব্য নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিজেপি শিবিরে। প্রকাশ্যে কেউ কিছু মন্তব্য না করলেও শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠদের অনেকেই ক্ষুণ্ণ। তাঁদেরই একজন সোমবার বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু’দা পরিষদীয় নেতা হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। দিলীপ’দা হয়তো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশেই কথাটা লিখেছেন। কিন্তু সেটা স্পষ্ট করা উচিত ছিল। তৃণমূল যে ভাবে বিষয়টা নিয়ে রাজনীতি করছে, তাতে বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু’দার অস্বস্তি হতেই পারে।’’
তৃণমূলের মুখপত্রে দিলীপের মন্তব্য সংক্রান্ত খবর জায়গা পেয়েছে প্রথম পাতার উপরের দিকেই। সেখানেও শুভেন্দুকে খোঁচা দেওয়া হয়েছে। দিলীপ শিবিরের এক নেতা অবশ্য বলেন, ‘‘রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপি-তে থেকেও বেসুরো কথাবার্তা বলছিলেন, তখন দিলীপ’দা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলেন। কমপক্ষে শো-কজ করা হোক বলে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে আর্জিও জানিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের একাংশ তার বিরোধিতা করেন এবং বলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-তেই থাকবেন। রবিবার দিলীপদার অনুমান মিলে যাওয়াতেই তিনি ফেসবুকে ওই কথা লিখেছেন।’’
বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ভাঙিয়ে যাঁদের বিজেপি-তে যোগদান করানো হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই পুরনো দলে ফিরে গিয়েছেন ভোটে ভরাডুবির পরে। মুকুল রায়-সহ পাঁচ বিধায়ক নাম লিখিয়েছেন শাসক শিবিরে। সদ্যই দল বদলেছেন সব্যসাচী দত্ত। এর পরে রাজীব। চলে গিয়েছেন ভোটের মুখে শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপি-তে আসা তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলও। তার পরেই দিলীপের মন্তব্য। নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ নিয়ে কী ভাবছেন তা অবশ্য জানা যায়নি। সোমবার একাধিবার তাঁকে ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি। জানা গিয়েছে, দিলীপের সঙ্গেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় একটি দলীয় কর্মসূচিতে রয়েছেন সুকান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy