প্রতীকী ছবি
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের প্রকোপ নতুন আতঙ্ক ছড়ায়। মানব দেহে এই ছত্রাক জাল বিস্তার করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে সেই অংশ বাদ দেওয়া প্রথাগত চিকিৎসা। অনেক ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্তকে বাঁচাতে অস্ত্রোপচার করে রোগীর চোখ বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আওতাধীন রাজ্যের চোখের রোগের উৎকর্ষ কেন্দ্র রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি (আরআইও)-তে অনুসরণ করা হচ্ছে নতুন পথ। চোখের পাতা এবং লোম বাদ না দিয়ে চোখের ভিতরের অংশে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। নতুন পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারে সাফল্য মিলেছে বলে দাবি আরআইও-এর চিকিৎসকদের।
চোখের সৌন্দর্য বজায় রাখতে এবং রোগীদের অবসাদ থেকে মুক্তি দিতেই ভিন্ন পথে চিন্তা শুরু করেন আরআইও-এর চিকিৎসকরা। চিকিৎসক সলিলকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রথাগত চিকিৎসায়, চোখের পিছনে ছত্রাক অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয়। এর জন্য রোগীর চোখের পাতা বা উপর দিক দিয়ে চোখের পিছনে প্রবেশ করা হয়। এতে চোখের পাতার অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু আমরা এই প্রবেশ রাস্তা বদলে ফেলেছি। উপরে দিকের বদলে চোখের এক কোণ দিয়ে চোখের ভিতরে প্রবেশ করছি। তাতে চোখের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে না।’’
এখনও পর্যন্ত নতুন এই পদ্ধতিতে আট জন রোগীর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সলিল। তবে যে হেতু এই রোগীদের সম্পূর্ণ চোখ বাদ দেওয়া হয়নি তাই একাধিক বার ওই অংশের বায়োপ্সি এবং ফাঙ্গাল কালচার করে দেখা হয়েছে।
চলতি বছরের ২৭ মে আরআইও-তে প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের অস্ত্রোপচার হয়। উত্তরবঙ্গ থেকে আসা সুকুমার দাসের (নাম পরিবর্তিত) অস্ত্রোপচার করে বাঁ দিকের সম্পূর্ণ চোখ বাদ দেওয়া হয়। এতে চোখের ওই অংশ গর্ত হয়ে যায়। পরে প্লাস্টিক সার্জারি করে নতুন করে চোখের অংশ গড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতেও আগের মতো স্বাভাবিক চোখ পাওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়াও অস্ত্রোপচারের পর চোখের অংশটি গর্ত হয়ে যাওয়াতে রোগীরাও মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন।
রোগীর শরীরে প্রবেশ করে, দ্রুত এই ছত্রাক রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিশেষ করে নাক, কান থেকে চোখ এবং চোখের পিছনের অংশে সংক্রমণ ঘটিয়ে মস্তিষ্ক পর্যন্ত রাজত্ব বিস্তার করে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৮৭ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৯৭ জনকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy