গ্রাফিক: তিয়াসা দাস.
বছর তেরোর মেয়েটির বাড়িতে টিভি নেই। হামেশাই পছন্দের অনুষ্ঠান দেখতে সে চলে যেত পড়শিদের বাড়িতে। রাতে প্রতিবেশী ‘কাকু’ টিভি দেখতে বাড়িতে ডাকায় তাই কিচ্ছুটি মনে হয়নি তার।
সেই বাড়ি থেকেই ছটফটে মেয়েটার বস্তাবন্দি দেহ মিলল শুক্রবার গভীর রাতে। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল পড়শি ‘কাকু’র বিরুদ্ধেই। অভিযুক্তের বয়স বছর পঁয়ত্রিশ। তার সতেরো পেরনো মেয়ের বিয়ে হয়েছে একমাস আগে।
নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের এই অভিযোগে শুক্রবার রাত থেকেই তোলপাড় হলদিয়া। অভিযুক্ত সুজন পাত্র দিনমজুরির পাশাপাশি নাম-সংকীর্তনও করেন। ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই নাবালিকার বাবা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
নিহত নাবালিকা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার এক ভাই ও বোন রয়েছে। নাবালিকার বাবা পেশায় টোটো চালক। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ মেয়ে যখন সুজনের বাড়িতে গিয়েছিল, তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাতে এলাকায় ষাঁড় ঘুরে বেড়াচ্ছে শুনে ছটফটে মেয়েটি বাইরে বেরোয়। রাত ১১টা নাগাদ সুজন তাকে টিভি দেখার নাম করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সুজনের স্ত্রী মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একাই ছিলেন সুজন। অভিযোগ, নাবালিকা এলে তাকে জোর করে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ করে সুজন। পরে বস্তা চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করা হয়।
রাত ১২টাতেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করেন পরিজন ও প্রতিবেশীরা। তখনই সুজনের বাড়ি থেকে গোঙানির শব্দ শুনতে পান কয়েক জন যুবক। তাঁরা সুজনকে বাড়ির দরজা খুলতে বললে সে প্রথমে রাজি হয়নি। শেষে জোর করেই তাঁরা সুজনের বাড়িতে ঢোকেন এবং বস্তার মধ্যে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেন। তত ক্ষণে অবশ্য গোঙানি থেমে গিয়েছে। নিথর হয়ে গিয়েছে শরীরটা। হাতেনাতে সুজনকে ধরে ফেলে মারধর করেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে। নাবালিকার দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়।
মেয়েহারা বাবার হাহাকার, ‘‘যার নিজের একটা মেয়ে রয়েছে, যাকে আমার মেয়ে কাকু বলে ডাকত, সে কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটাল সত্যি বুঝে উঠতে পারছি না।’’ সঙ্গে তাঁর আর্জি, ‘‘সুজনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে ভবিষ্যতে এমন কাজ করার সাহস কেউ না-পায়।’’
আর সুজনের স্ত্রী পূর্ণিমা বলছেন, ‘‘আঠারো বছরের দাম্পত্য জীবন আমাদের। কোত্থেকে যে কী হল বুঝতে পারছি না। আমি আর আমার মেয়ে এখন মুখ দেখাবই বা কী করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy