Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

দু’গোষ্ঠীর হাতাহাতিতে ফের স্থগিত তৃণমূলের সভা

আজ, শুক্রবার কান্দিতে দলীয় প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনের হয়ে প্রচারে আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এক দিন আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে বড়ঞায় দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতিতে স্থগিত হয়ে গেল তৃণমূলের সভা। ক’দিন পরে সোমবারে ভোট। তার আগে এই ভাবে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০২:৩২
Share: Save:

আজ, শুক্রবার কান্দিতে দলীয় প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনের হয়ে প্রচারে আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এক দিন আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে বড়ঞায় দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতিতে স্থগিত হয়ে গেল তৃণমূলের সভা। ক’দিন পরে সোমবারে ভোট। তার আগে এই ভাবে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব।

জেলার কার্যকরী সভাপতি তথা বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “বড়ঞায় গোষ্ঠী কোন্দল বহু দিনের সমস্যা। বৈঠক করেও মেটেনি। ভোটের আগে এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। আমি দিদির কাছে বিষয়টি জানাব।” প্রার্থী ইন্দ্রনীল অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেসের কিছু লোক তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মঞ্চে উঠে গোলমাল পাকিয়েছে।”

বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকবাংলার হাট ময়দানে এ দিনের সভায় মূলত বীরভূম জেলার একদল নেতা-মন্ত্রী এসেছিলেন। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ও বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জালালউদ্দিন ওরফে আফাজ মঞ্চে উঠতেই গোলমাল শুরু হয়। সেই সময় মঞ্চে বসে ছিলেন মুসার আলি ও আসমত শেখদীর্ঘদিন ধরে জালালউদ্দিনের সঙ্গে যাঁদের বিরোধ।

বচসা থেকে হাতাহাতি বেধে যায় দু’পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে। জালাল অনুগামী সামজেদ শেখের নাক ফেটে যায় ঘুষিতে। মঞ্চে উপস্থিত বাকিরা গণ্ডগোল থামানোর চেষ্টা করেন। লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম মাইক নিয়ে দু’গোষ্ঠীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিছুতেই কাজ না হওয়ায় সভা ছেড়ে চলে যান বীরভূমের জেলা নেতৃত্ব। পরে মন্ত্রী চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “সভায় কংগ্রেসের কিছু লোক ঢুকে গণ্ডগোল পাকিয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি। ওই অবস্থায় সভা করলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ত। তাই সভা বাতিল করি।”

অন্দরের খবর, ‘কংগ্রেসের লোক’ বলে যাঁর দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে, তিনি সুন্দরপুরের আসমত শেখ। জালালউদ্দিনের বিরোধী গোষ্ঠীর এই নেতা একদা কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আসমত দলবল নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত সামান শেখও সিপিএম ছেড়ে জালালউদ্দিনের নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দেন। দু’জনে একই দলে নাম লেখালেও পুরনো বিরোধ মেটেনি। পঞ্চায়েতে সামান তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী হলে, ওই আসনেই আসমত নির্দল প্রতীকে ভোটে দাঁড়ান। কিছু ভোটের ব্যবধানে সামান জিতলেও অন্য আসনে আসমতের অনুগামীরা জিতে পঞ্চায়েতের দখল নেন। সামান ও আসমতের মতোই এলাকা দখল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চলছে আরএসপি থেকে আসা জালালউদ্দিন ও মুসার গোষ্ঠীর। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাদের অনুগামীদের প্রকাশ্যে হাতাহাতি হয়েছে। বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী বলে পরিচিত জালালউদ্দিনের দাবি, “আমাকে হেয় করার জন্য ঝামেলা পাকায় আসমতের গোষ্ঠী।” আসমত অবশ্য সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথাই মানছেন না।

এ দিকে, তৃণমূলের ওই মঞ্চ থেকে মাত্র মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে বড়ঞা গ্রামে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর সভা চলছিল তখন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর দ্রুত অধীরের কাছে পৌঁছে যায়। মাইক হাতে তাঁর কটাক্ষ, “কংগ্রেস সভা করছে শান্তিতে। আর ডাকবাংলায় তৃণমূল নিজেদের মধ্যে মারপিট করছে। এটাই ওদের সংস্কৃতি।”

অন্য বিষয়গুলি:

kandi Group conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE