মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ‘ভেড়ার’ তুলনা টানলেন রেজিনগরের প্রাক্তন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আর নিজের তুলনা করলেন বাছুরের সঙ্গে।
শনিবার বিকেলে কান্দির বড়ঞা ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব ডাকবাংলো মোড়ে একটি জনসভার আয়োজন করেছিলেন। তাতে ডাক পড়েনি ‘বিক্ষুব্ধ’ হুমায়ুনের। তাই এদিন সকালে ডাকবাংলোতেই একটি কমিউনিটি হলে অনুগামীদের নিয়ে নিজের মতো কর্মিসভা করেন হুমায়ুন। সেখানে তিনি জেলা নেতৃত্বের সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, “ভেড়া দিয়ে চাষ হয় না। বাছুর দিয়ে চাষ হয়। আমরা বাছুরের দল। আমরা তবু কিছুটা চাষ করতে পারব। বর্তমানে যারা মুর্শিদাবাদ জেলায় দল পরিচালনা করেন তাঁদের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দক্ষতা নেই।”
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য হুমায়ুনের এই ধরনের মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ। হুমায়ুনের মূল নিশানায় যিনি, সেই জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক ইন্দ্রনীল সেনের প্রতিক্রিয়া, “এই ধরনের কথা বললে দলনেত্রীকে বলা হয়। দলনেত্রীর সঙ্গে কী ভাষায় কথা বলবেন, সেটা হুমায়ুনই ঠিক করবেন। উনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। আমি ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”
জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস রায়চৌধুরী বলেন, “জমিটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বাছুর দিয়ে চাষ করাবেন না ভেড়া দিয়ে চাষ করাবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার।”
গত লোকসভা নির্বাচনে গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে তৃণমূলনেত্রী বহরমপুরের প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করার পরে হুমায়ুন অভিমানে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই দ্বন্দ্ব শুরু। লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূলনেত্রী ইন্দ্রনীলকে মুর্শিদাবাদের জেলা পর্যবেক্ষক করার পরে তিক্ততা আরও বাড়ে। গত জুলাই মাসে ইন্দ্রনীলের গড়া জেলা কমিটিতে কোথাও ঠাঁই হয়নি হুমায়ুনের। এরপর থেকেই প্রকাশ্যে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন হুমায়ুন।
এ দিনের কর্মিসভায় তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলার কিছু নেতা ভুল পথে চালনা করছেন।” এমনকী ‘অধীর চৌধুরীর সঙ্গে লেনদেন করে’ দলের কিছু নেতা সংগঠনকে বাড়তে দিতে চাইছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। ইন্দ্রনীল সেনের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করে হুমায়ুন বলেন, “যে বুথ প্রতি ১০ শতাংশ ভোট পায় না, যার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, তাঁকে জেলার নেতৃত্ব দেওয়া হলে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হলে দলের সৈন্যরা মাঠে মারা পড়বেন। এ ধরনের সেনাপতি নিয়ে জিততে পারব না।”
এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ইন্দ্রনীল বলেন, “সকালের ওই সভাটা তৃণমূলের সভা ছিল না। একেবারে হুমায়ুনের ব্যক্তিগত সভা। সেখানে কে-কাকে-কী বলছে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy