অধীর চৌধুরী। ও হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
বেলায় এলেন ‘তিনি’। বেলা বাড়লে ‘উনি’।
মুর্শিদাবাদের সিজেএম আদালতে হাজির হয়ে একদা ‘গুরু-শিষ্য’ দুজনেই জামিন নিয়ে গেলেন।
শুক্রবার দুপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বহরমপুরে সিজেএম আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়ে গেলেন। তার ঘণ্টা কয়েক আগে জেলা তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতিও এসেছিলেন। জামিন নিয়ে ফিরে গিয়েছেন রেজিনগরের বাড়িতে। অভিযোগ, একই। নির্বাচনী বিধিভঙ্গ।
অধীর বহরমপুর পুরসভার বাসিন্দা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শক্তিপুর থানার পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭১ (এফ) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করে। অধীরের আইনজীবী পীযুষ ঘোষ বলেন, “রেল দফতরের মন্ত্রী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও। ব্যস্ত থাকায় এত দিন আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি। ওই মামলায় এ দিন আদালতে হাজির হয়ে তিনি ৫০০ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন।”
সেই সঙ্গে জলঙ্গির বাদল শেখ খুনের ঘটনায় জেলা জজ আদালতের নির্দেশে সিজেএম আদালতে হাজির হন অধীর। তাঁর আইনজীবী জানান, ওই মামলায় আগাম জামিনের আবাদেন করা হলে জেলা জজ আদালতের দায়রা বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস তা মঞ্জুর করেন। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুজন জামিনদারের শর্তে আগাম জামিন দিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশও দেন। সেই মত অধীর আদালতে হাজির হন এবং জামিননামা দাখিল করা হয়।
এর আগে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ১ এপ্রিল শক্তিপুরের কাটাইকোনা এবং সোমপাড়া-২ পঞ্চায়েতের মিল্কিতে তৃণমূলের দুটি পথসভায় মাইক ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। জেলা কংগ্রেস প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। বহরমপুরের এসডিও সুপ্রিয় দাস বিডিওকে তদন্ত করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। বিডিও-র ওই রিপোর্ট প্রশাসন শক্তিপুর থানায় পাঠিয়ে দেয়। তার পরেই শক্তিপুর থানার পুলিশ হুমায়ুন কবীর-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের মামলা দায়ের করে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭১ (এফ) ও ১৮৮ ধারায় ওই মামলা দায়ের করার পরেই ১০ জনের মধ্যে ৮ জন সিজেএম আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু বেলডাঙা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বামদেব দত্ত ও হুমায়ুন কবীর জামিন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হুমায়ুনের প্রতিক্রিয়া ছিল, “ক্ষমতা থাকলে পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। আমরা জামিন নেব না।” এ দিন জামিন পেয়ে হুমায়ুন বলেন, “ওই মামলায় জামিন নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে অনুরোধ করা হয়। ওই অনুরোধ মেনেই আমি জামিন নিয়েছি।” অধীর অবশ্য বলেন, “প্রতিহিংসাপরায়ণ ও উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ওই খুনের মামলায় আমার নাম মিথ্যা করে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারি এবং শাসক দল কোনও ভাবে ওই মামলায় আমাকে জেলে ঢোকাতে পারলে ভোট প্রচার করতেও অসুবিধার মুখে পড়তে হত আমাকে। তৃণণূল সেই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy