Advertisement
E-Paper

আইনজীবী হয়ে প্রতিষ্ঠা মেলেনি, গাঁজা পাচারে ধৃত যুবকের দাবি

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রানাঘাটের বেগো পাড়ার কাছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে ওই গাড়িটিকে থামায় পুলিশ। তল্লাশি করতেই গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১০৪ কিলোগ্রাম গাঁজা।

ধৃত বিনোদ টমাস।

ধৃত বিনোদ টমাস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৪
Share
Save

মুম্বই থেকে বিমানে বাগডোগরা। তার পর সড়কপথে কোচবিহার। সেখান থেকে ১০০ কিলোগ্রামের বেশি গাঁজা নিয়ে সড়ক পথে হাওড়া পৌঁছে, ট্রেনে করে তা মুম্বই নিয়ে যাওয়ায় উদ্দেশ্য ছিল। রানাঘাটে গাঁজা পাচারে ধৃত বিনোদ টমাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মুম্বই হাই কোর্টের আইনজীবী। ওই যুবক কী ভাবে জড়িয়ে পড়ল গাঁজা পাচার চক্রের সঙ্গে— আপাতত সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।

গত শুক্রবার কোচবিহার থেকে একটি গাড়ি হাওড়ার উদ্দেশে যাচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রানাঘাটের বেগো পাড়ার কাছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে ওই গাড়িটিকে থামায় পুলিশ। তল্লাশি করতেই গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১০৪ কিলোগ্রাম গাঁজা। আটক করা হয় গাড়িটি। গ্রেফতার করা হয় চালকের আসনে থাকা যুবক বিনোদ টমাসকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারের পরে বছর পঁচিশের ওই যুবক নিজেকে মুম্বই হাই কোর্টের আইনজীবী বলে পরিচয় দেয়। তদন্তের পর রবিবার পুলিশের দাবি, যুবকের দেওয়া ওই পরিচয় মিথ্যে নয়। সে আইনজীবী পেশার সঙ্গে যুক্ত।

ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে উচ্চশিক্ষিত পরিবারের একমাত্র ছেলের বিনোদ টমাস। তার বাবা এক জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ড। ওকালতি পাশ করে বর্তমানে ওই যুবক মুম্বইয়ে থাকে। সেখানে হাই কোর্টের আইনজীবী সে। কিন্তু এক জন আইনজীবী হয়ে কী ভাবে গাঁজা পাচারের সঙ্গে যুক্ত হল, সে প্রশ্নের উত্তরে ধৃত তদন্তকারীদের জানিয়েছে, সে সদ্য বিয়ে করেছে। আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। তাই হতাশা গ্রাস করছিল তাকে। তদন্তে সে পুলিশকে আরও জানিয়েছে, কোচবিহার থেকে ওই গাঁজা মুম্বই পৌঁছতে পারলে যুবক এক লক্ষ টাকা পেত।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার থেকে একটি গাড়ি তৃতীয় কোনও ব্যক্তি ভাড়া করে দিয়েছিল বিনোদকে। শুক্রবার সে নিজেই গাড়ি চালিয়ে হাওড়া যাচ্ছিল। সড়কপথে কোচবিহার থেকে হাওড়ার দূরত্ব প্রায় ৭০০ কিলোমিটার। তার মধ্যে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে রানাঘাটের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় বিনোদ। পুলিশ তার পিছু নিয়েছে বুঝতে পেরে জাতীয় সড়ক ছেড়ে রানাঘাট থানার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে চূর্ণী নদীর কাছে সঙ্কীর্ণ রাস্তায় বেশ কিছু সময় গাড়ি রেখেছিল সে। তবে স্থানীয়দের আপত্তিতে ফের গাড়ি নিয়ে জাতীয় সড়কে ওঠে বিনোদ। তার পরেই বেগোপাড়ার কাছে পুলিশ গাড়ি থামায়।

ঠিক ছিল, হাওড়া পৌঁছে ওই গাড়ি নির্দিষ্ট একটি জায়গায় রেখে, ট্রেনে চেপে মুম্বই পাড়ি দেবে ধৃত যুবক। কিন্তু নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনের পরিবর্তে সড়কপথে কোচবিহার থেকে হাওড়া হয়ে কেন যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার? তদন্তে জানা গিয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে মুম্বাইগামী মাত্র একটি ট্রেন চলাচল করে। সেই ট্রেন আবার সপ্তাহে প্রতি দিন চলাচল করে না। তাই হাওড়া হয়ে মুম্বই যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেছিল বিনোদ।

এক পুলিশ কর্তা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক পাচারের ঘটনা নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে জাল কত দূর বিস্তৃত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যে গাড়িটি ভাড়া করা হয়েছিল, তার মালিকের খোঁজ পেতেও আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}