Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

লকডাউনে কেরলেই, আনলকে ঘরে এল টাকা

‘আনলক’-এর প্রথম পর্বে পাওনা টাকা গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে স্বস্তি বোধ করছেন কেরলে আটক কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৬:৫১
Share: Save:

হারানো কাজ ফের ফিরে পেয়েছেন তাঁরা। মাঝখানে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় আড়াই মাসের সুদীর্ঘ লকডাউন, ঘরে ফেরা আর হয়নি। কখনও আধপেটা খেয়ে, দিনের পর দিন ভিন রাজ্যের ঠিকানায় কাটিয়ে তাঁদের তৃপ্তি— কাজটা তো ফিরে পেয়েছি। ‘আনলক’-এর প্রথম পর্বে তাই পাওনা টাকা গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে স্বস্তি বোধ করছেন কেরলে আটক কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদেরই এক জন ইদ্রিস শাহ সোমবার মোবাইলে বলেন, ‘‘প্রায় দু’মাসের বেশি সময় ধরে খুব কষ্ট পেয়েছি। সব সময় অস্থির হয়ে থেকেছি বাড়ির কথা ভেবে। কাজ না-থাকায় বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারিনি। তবে আশার কথা এখানে (কেরলে) পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। বাড়িতে কিছু টাকাও পাঠিয়েছি।’’

ইদ্রিসের মতো আরও অনেকেই রয়েছেন যাঁরা কেরলের আনাচ কানাচে আটকে রয়েছেন। বাড়ি ফেরা হয়নি পঞ্জাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রে কর্মরত বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তাঁদের বন্দিত্বের কষ্টের থেকেও ঘরে টাকা পাঠাতে না-পারার যন্ত্রণা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু আনলকের প্রথম পর্বে ভিন রাজ্যের সেই সব ঠিকানায় কাজ শুরু হয়েছে।অনেকেই হাতে পেয়েছেন পাওনা টাকা। হাসি ফুটেছে তাতেই।

লকডাউন শুরু হওয়ার পরে দিন কয়েকের মধ্যে প্রাথমিক ভাবে খাওয়া তার পরে থাকার অসুবিধা শুরু হতেই ঘরে ফেরার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে। কেউ বাস ভাড়া করে কেউ বা শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে দলে দলে তাঁরা ঘরে ফিরতে থাকেন। কিন্তু পরিযায়ীদের অধিকাংশেরই দাবি, ঘরে পেরার আনন্দটুকু অচিরেই নিভে গিয়েছিল এখানে কর্মসংস্থানের তেমন উপায় খুঁজে না পেয়ে কিংবা দিন মজুরির দর তেমন উর্ধ্বমুখী না হওয়ায়। গত দু’সপ্তাহ ধরেই তাঁদের ফিরে যাওয়াও শুরু হয়েছে।

হরিহরপাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বেশ কিছু গ্রামে রয়েছেন এমনই বহু শ্রমিক যাঁদের ঘরে ফেরা আর হয়ে ওঠেনি। কেশাইপুর তেমনই একটি গ্রাম। এই গ্রামে অন্তত ৪০ জন শ্রমিক এখনও কেরলে আটকে রয়েছেন। একই ছবি আশপাশের রুকুনপুর, নশিপুরের মতো গ্রামগুলিতে। যাঁরা অধিকাংশই রাজমিস্ত্রি। কেশাইপুরের ইদ্রিস শাহ, আক্তারুল শাহরা এমনই এক গুচ্ছ শ্রমিক যাঁরা দাঁত কামড়ে ভিন রাজ্যে পড়ে থেকে কাজ ফিরে পেয়েছেন। এই সময় তাঁদের পরিবারের অবস্থাও যে নুন আনতে পান্তা ফুরানো হয়েছিল ইদ্রিসের স্ত্রী সেরিনার কথাতে তা স্পষ্ট, ‘‘বড় কষ্টে গিয়েছে এই ক’টা মাস। তেল- নুন কেনার মতো টাকাও ছিল না। তবে কেরল থেকে ফের টাকা আসায় এখন মনে হচ্ছে কষ্ট করলে ফলও মেলে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy