কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গ্রামবাসীদের। সামনে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়াকে কেন্দ্র করে নদিয়ার ভীমপুর থানার মলুয়াপাড়া সীমান্তে উত্তেজনা। মঙ্গলবার সকাল থেকে কাঁটাতারের সীমানা নিয়ে বিতর্কের জেরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর পর দীর্ঘ ক্ষণ ধরে পথ অবরোধ করেন মলুয়াপাড়ার গ্রামবাসীরা। এর ফলে আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে কাঁটাতার বসানোর কাজ।
আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর ক্ষেত্রে উভয় দেশের প্রকৃত সীমান্ত থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ গজ অর্থাৎ, ৪৫০ ফুট ভিতরে কাঁটাতার বসাতে পারবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী, এমনটাই নির্দেশ রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। অভিযোগ, ওই নির্দেশিকাকে অমান্য করে বিএসএফ এবং সিপিডব্লিউডি কোথাও ১,০০০ ফুট কোথাও ১,২০০ ফুট, কোথাও সর্বোচ্চ ১,৪৩০ ফুট ভিতরে কাঁটাতার বসানোর কাজ করছে। ওই কাঁটাতার সরিয়ে সর্বোচ্চ ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতার বসানোর দাবিতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। গ্রামবাসীরা কাঁটাতারের স্তম্ভগুলি উপড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ। এর পর বিএসএফের ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের তর্কাতর্কিতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদিয়া জেলায় এখনও বেশ কিছু অঞ্চল কাঁটাতার বিহীন অবস্থায় আছে। চোরাচালান আটকাতে বিএসএফের পক্ষ থেকে চাপড়া ব্লকের ফেনসিংহীন মলুয়াপাড়া, রাংগিয়াপোতা, মহাখোলা, হুদাপাড়া ইত্যাদি এলাকায় কাঁটাতার বসানো শুরু হয়। তবে এই বিতর্ক নতুন নয়। ২০০২ সালে এখানে কাঁটাতার বসানোর প্রক্রিয়ায় নিয়ম ভাঙা হয়েছে, এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন গ্রামবাসীরা। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি একে মাথুরের বেঞ্চ বিএসএফের হলফনামায় সন্তুষ্ট হয়ে কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেয়। তবে ২০০৩ সালে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবার আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনের শুনানিতে ২০০৬ সালে তৎকালীন বিচারপতি নাদিয়া পাথারিয়া রায় দেন যে, কোনও ভাবেই সীমান্ত থেকে ১৫০ গজের বেশি গ্রামের ভিতরে ঢুকে কাঁটাতার বসানো যাবে না। ধর্মীয় স্থান, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই নির্দিষ্ট সীমানা প্রয়োজনে কমিয়ে দিতে হবে। তবে অজ্ঞাত কারণে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে মলুয়াপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে অস্থায়ী ভাবে কাঁটাতার বসানো হয় বলে অভিযোগ। কাঁটাতারের ও পার অর্থাৎ বাংলাদেশের দিকে চলে যায় গ্রামের অর্ধেক অংশ। চুরি-ছিনতাই, অপহরণের মতো ঘটনার প্রেক্ষিতে এই কাঁটাতার দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
এ নিয়ে নদিয়ার জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।’’ বিএসএফের তরফে ডিআইজি জনসংযোগ একে আর্য অবশ্য বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে কাজ হবে। নির্দেশ লঙ্ঘনের কোনও প্রশ্নই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy