মেলার মাঠে শিবির করে চলছে স্বাস্থ্যপরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে চলছে স্বাস্থ্যমেলা। নবদ্বীপের বাহিরচরা ভেঙে পড়েছে সেই মেলার মাঠে।
সোমবার দুপুরে এলাকার মহিলাদের নিয়ে চলছে কুইজ। মাইক্রোফোন হাতে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী ছুড়ে দিলেন প্রশ্নটা—‘শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে কী হয়?’ থিকথিকে ভিড় থেকে উত্তরও এল চকিতে—‘আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তপাতাল হয়।’ মাঝবয়সী ওই মহিলার এমন উত্তর শুনে কেউ হেসে ফেললেন। কেউ অপ্রস্তুত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন। কেউ আবার না বুঝেই হাততালি দিলেন। তবে উত্তর শুনে ওই মহিলাকে উৎসাহিত করলেন মঞ্চে বসে থাকা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। শুধু মাইক্রোফোন হাতে জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বললেন, ‘‘রক্তপাতাল নয়, ওটা হবে রক্তাল্পতা। আর আপনারা এটা নিয়ে কেউ হাসাহাসি করবেন না। নামটা উনি ঠিক ভাবে বলতে পারেননি। কিন্তু বিষয়টা তো বুঝেছে। এটা কিন্তু অনেক বড় ব্যাপার।”
ফের উড়ে এল আর একটি নতুন প্রশ্ন—‘কী ভাবে বুঝবেন রক্তাল্পতা হয়েছে?’ মুহূর্তে হাত উঠল অনেকগুলো। ভিড়ের মধ্যে থেকে এক কিশোরী বলল, ‘‘মাথা ঘুরবে। চোখমুখ ফ্যাকাসে হয়ে যাবে।” মঞ্চ ও মঞ্চের সামনে ফের হাততালি। সোমবার থেকে শুরু হওয়া ওই মেলা চলবে আজ, বুধবার পর্যন্ত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটা সময় এই এলাকায় বাড়িতেই প্রসব হতো। নবদ্বীপের এই গ্রামে ২০১২-১৩ সালে বাড়িতে প্রসবের হার ছিল ৯২%। ২০১৩-১৪ সালে ৮৩%। ২০১৪-১৫ সালে ৭৪%, ২০১৫-১৬ সালে ৬৮ %। ২০১৭ সালে ১৫৩ জন প্রসূতির মধ্যে ৬৭ জনের প্রসব হয়েছে বাড়িতে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, নাগাড়ে প্রচার, বৈঠক, গ্রামের মুরুব্বি, ইমামদের সাহায্য নিয়ে ধীরে ধীরে গ্রামের চেহারাটা বদলে যাচ্ছে। একশো শতাংশ সাফল্যের লক্ষেই এই মেলার আয়োজন। কিন্তু যে গ্রামগুলোতে এখনও বাড়িতে প্রসব হচ্ছে। সেখানে কী অবস্থা? (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy