দুর্ঘটনার পরে। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন পড়শি, ফাঁকা বাড়িতে একা থাকতে তাই বড় ভয় জাকির শেখের। গ্রাম থেকে তাই রাতে থাকার জন্য ডেকে এনেছিলেন তার দুই সদ্য-বালক ভাগ্নেকে।
কাল হয়েছিল সেটাই। রাতে দুই নাবালক, শামিম শেখ (১১) আর ভাগ্নে শহিদ মণ্ডল (১৩) মহম্মদের গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়েই খুলে গিয়েছিল গ্যাসের মুখ। বকুনি খাওযার ভয়ে মামাকে না জানিয়ে শুয়ে পড়েছিল তারা। আর সেখানেই বিড়ি ধরাতে গিয়ে প্রবল বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল বাড়ির ছাদ। শুক্রবার রাতের ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন তিন জনেই।
জলঙ্গির এনায়েৎপুরের ওই ঘটনার পরে বাড়িটি ‘সিল’ করে দিয়েছে পুলিশ।
পড়শিরা জানাচ্ছেন, বছর সাতাশের জান মহম্মদ বড় ভীতু প্রকৃতির। দিন কয়েক আগে বালির ঘাটে বাস দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল তাঁরই প্রতিবেশি জান মহম্মদ শাহ। তার পর থেকে মাঠের ধারে ফাঁকা বাড়িতে একা থাকতে ভয় পেতেন জাকির। ওই দিন রাতে তাই গ্রাম থেকে দুই ভাগ্নেকে ডেকে এনেছিলেন, ‘চল না রাতে শুবি আমার সঙ্গে!’
রাতে দু’জনে হুটোপুটি করার সময়েই সম্ভবত খুলে গিয়েছিল গ্যাস সিলিন্ডারের মুখ। তার পর কাউকে না জানিয়েই শুয়ে পড়েছিল তারা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বিড়ি ধরাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। তুমুল শব্দে ফেটে যায় সিলিন্ডার। ছড়িয়ে পড়ে আগুন। রক্ষা পায়নি কেউই।
আশপাশের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগুনের হলকা এমন তীব্র ছিল যে, কাছে ঘেঁষতেই ঘণ্টা কাবার হয়ে যায়।
ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ঘরে একটি ছোট গ্যাস সিলিণ্ডার ছিল। সেটা ঠিক ভাবে বন্ধ না করার ফলে ঘরে গ্যাস ছড়ায়। আর তার পর বিড়ি খেতে গিয়েই হয়ত আগুন লাগে। মিনিট কয়েকে সিলিণ্ডারটি ফেটে যাওয়ার ফলে আগুন আরও ভয়ানক আকার নেয়।’’ তবে, এটা পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত, প্রয়োজনে ফরেনসিক পরীক্ষাও করানো হতে পারে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
জাকিরের বাড়ির পাশেই থাকেন রিনা সরকার। তিনি বলেন, ‘‘সবে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ তুমুল শব্দ। দেখি পাশের বাড়িতে আগুন জ্বলছে। ছাদে উঠে চেঁচাতে শুরু করি। কিন্তু কাছে ঘেঁষতে পারছিলাম না।’’ পড়শি মঞ্জুরা বিবিও বলছেন, ‘‘আগুনের তাপে কাছে ঘেঁষার আগেই পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছিল আস্ত বাড়িটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy