—ফাইল চিত্র
বাড়তি লাভের আশায় শীতের মরসুমের দিকে তাকিয়ে থাকেন বহরমপুর ও লালবাগের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু হোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, শীতের মরসুমে গত বারের তুলনায় মুর্শিদাবাদে ৭০-৭৫ শতাংশ পর্যটক কম এসেছেন। পর্যটন ব্যবসায় সঙ্গে যুক্ত লোকজনের দাবি, গত ১০-১৫ বছরে ব্যবসার হাল এত খারাপ হয়নি।
এমনিতেই এনআরসি ও নয়া নাগরিকত্ব আইনের আতঙ্কে লোকজন নথিপত্র জোগাড়ে ব্যস্ত। তার উপরে এনআরসি আতঙ্কের জেরে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুর্শিদাবাদের একের পর স্টেশন ও ট্রেনে আগুনে লাগিয়ে দেয়। যার ফলে যারা হোটেল বুকিং করেছিলেন তাঁদের অধিকাংশ বাতিল করে দেন।
মূলত নবাবের শহর মুর্শিদাবাদকে সামনে রেখে পর্যটকরা এ জেলায় আসেন। অনেকেই জেলা সদর বহরমপুরের হোটেলগুলিতে রাত্রিবাস করে মুর্শিদাবাদ শহর সহ আশপাশের পর্যটনস্থলগুলি ঘুরে দেখেন। ফলে মুর্শিদাবাদ শহরের পাশাপাশি জেলা সদর বহরমপুরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বহরমপুরের লালদিঘি লাগোয়া এক হোটেলের মালিক চন্দন সরকার বলছেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার পর্যটনের মরসুমে ৭০-৭৫ শতাংশ পর্যটক কম এসেছেন। ফলে আমাদের বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।’’
পর্যটকদের সামনে আকর্ষণীয় করতে বহরমপুরের পঞ্চাননতলার রাধিকানগরের একটি হোটেলের ছাদের উপরে সুইমিং পুল, জিমসহ নানা পরিকাঠামো তৈরি করেছে। কিন্তু এবারে সামান্য পরিমাণ পর্যটক আসায় তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ওই হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার অরিজিৎ সমাদ্দার বলছেন, ‘‘এ বছর পর্যটক আসেননি বললেই চলে। এনআরসি আতঙ্কের জেরে একের পর স্টেশন ও ট্রেন জ্বলল, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হয়ে গেল। যার জেরে পর্যটকরা বুকিং বাতিল করে দিলেন।’’
মুর্শিদাবাদ পুরসভাও পর্যটকদের মাথা পিছু তিন টাকা ও পর্যটকদের গাড়ি ৩০ টাকা করে থেকে লেভি আদায় করে। পুরসভা সূত্রের খবর গত বছর ৩৪ লক্ষ টাকা লেভি আদায় করেছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬০ হাজার টাকার লেভি আদায় হয়েছে। মুর্শিদাবাদ পুরসভার কর্তাদের দাবি, প্রতি বছর শীতের মরসুমে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৭-৮ লক্ষ পর্যটক মুর্শিদাবাদ শহরে আসেন। এবারে সেখানে লাখ দুয়েক পর্যটক এসেছেন।
মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান বিপ্লব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এনআরসি আতঙ্কে লোকজন আধারকার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন নথি জোগাড় করতে সরকারি অফিসগুলিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন। বেড়ানোর থেকে নথিপত্র জোগাড় তাঁদের কাছে জরুরি। যার জেরে লোকজন এ বারে খুবই কম এসেছে।’’
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ধার দেনা করে ব্যবসায়ীরা দোকানে জিনিসপত্র তুলেছিলেন। কিন্তু তা বিক্রি হয়নি।’’ মুর্শিদাবাদ হোটেল মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক দেবব্রত দাস বলছেন, ‘‘আগের মরসুমে যে ঘরের ভাড়া দেড় হাজার টাকা ছিল, তা ৫০০-৬০০ টাকাতেও দিতে হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy