ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাড়িতে দিল্লি থেকে এল বিজেপির ‘পুস্তিকা’ এবং প্রশংসাপত্র। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ওই ‘পুস্তিকা’ পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয় প্রশংসাপত্রটি এসেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে। গোটা ঘটনাটিকে ‘সিলি মিসটেক’ বলে দাবি করেছেন হুমায়ুন।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে হুমায়ুনের বাড়িতে রেজিস্ট্রি পোস্টে বিজেপির ‘পুস্তিকা’ আসে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসা ‘পুস্তিকা’য় কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা সবিস্তার লেখা রয়েছে। এ ছাড়া, বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে এসেছে একটি প্রশংসাপত্র। দলের হয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলে বিজেপির নেতা-কর্মীরা ওই প্রশংসাপত্র পেয়ে থাকেন। দিল্লি থেকে আসা পত্রে হুমায়ুনকে ‘বিজেপি নেতা’ বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য তাঁকে ধন্যবাদও জানানো হয়েছে। বিজেপির রাজ্য স্তরে আগামী দিনের কর্মসূচিও তাতে বর্ণনা করা হয়েছে।
গোটা ঘটনাটিকে ‘ভুল’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি জানিয়েছেন, এক সময় তিনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই কারণেই এমন ‘ভুল’ হয়ে থাকতে পারে। তবে এই ধরনের ‘ভুল’ একেবারেই কাম্য নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। হুমায়ুন বলেন, ‘‘২০১৯ সালে বিজেপির জন্য জেলায় ১০ হাজারের বেশি সদস্য তৈরি করেছিলাম। রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলাম। তখন থেকে নিয়মিত এই পুস্তিকা আমার কাছে আসে। কিন্তু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এটা কাম্য নয়। এই ধরনের সিলি মিসটেক বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের করা উচিত হয়নি।’’
জেলা স্তরের বিজেপি নেতারা অবশ্য ঘটনার দায় এড়িয়েছেন। বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র বলেন, ‘‘উনি একটা সময় বিজেপিতে ছিলেন। এখন তৃণমূলে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হয়। এ ব্যাপারে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।’’
হুমায়ুন ১৯৮২ সাল থেকে রাজনীতি করছেন মুর্শিদাবাদ জেলায়। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কংগ্রেস করেছেন। অধীর চৌধুরীর ‘ছায়া সঙ্গী’ বলে পরিচিতও ছিলেন। ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে রেজিনগর থেকে প্রথম বিধায়ক নির্বাচিত হন। কিন্তু অধীরের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হওয়ায় ২০১২ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন প্রতিমন্ত্রী হন হুমায়ুন। তবে ছ’মাস মন্ত্রী থাকার পর উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী রবিউল আলম চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন।
এর পরেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতৃত্বের সমালোচনা করায় দলবিরোধী কার্যকলাপের শোকজ করা হয়। এক পর অধীরের হাত ধরে কংগ্রেসে ফিরে আসেন হুমায়ুন। ২০১৮-য় পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের একটি আসনে লড়াই করতে নামেন। পরে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান।
এর এক মাসের মাথায় কংগ্রেস ছেড়ে দিল্লিতে বিজেপিতে যোগদান করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের হাত ধরে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি হয়ে লড়াই করতে নামেন। কিন্তু পরাজিত হন। পরে এনআরসি এবং সিএএ-র বিরোধিতা করে বিজেপি ছাড়েন হুমায়ুন। যোগ দেন তৃণমূলে। সেই হুমায়ুনের বাড়িতেই এ বার বিজেপির ‘পুস্তিকা’ এবং প্রশংসাপত্র এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy