ধুবুলিয়ার চৌগাছায় দর্শন ওরফে গ্যারা ঘোষের বাড়ি। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
গ্রামের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার পাশেই সাদা রঙের পাকা বাড়ি।
সেই বাড়ির মালিক তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত কৃষ্ণনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ ঘোষ। আবাস যোজনার ঘরের তালিকায় তাঁর স্ত্রী অপর্ণা ঘোষের নাম দু’বার রয়েছে। এক বার বাবার ‘ভাল’ নামে, এক বার বাবার ডাকনামে। অর্থাৎ এই তালিকা অনুমোদন পেলে তৃণমূল নেতার স্ত্রীর নামে দুটো পাকা বাড়ি বাবদ ১ লক্ষ ২০ দু’গুণে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা।
সিদ্ধার্থের বাড়ি ধুবুলিয়া থানার হাঁসাডাঙায়। তাঁর স্ত্রী অপর্ণা ঘোষের বাপের বাড়ি একই মৌজায় চৌগাছা এলাকায়। সম্প্রতি ব্লক প্রশাসনের কর্তারা আবাসের তালিকা পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, অপর্ণার নাম দুই জায়গায় রয়েছে। এক বার বাবার নাম লেখা হয়েছে ‘দর্শন ঘোষ’, আর এক বার ‘গ্যারা ঘোষ’। মঙ্গলবার চৌগাছায় গেলে অপর্ণার মা শিউলি ঘোষ জানান, তাঁর স্বামীর ভাল নাম ‘দর্শন’, তবে গাঁ-সুদ্ধ লোক তাঁকে ‘গ্যারা’ বলেই ডাকে। তিনি অবশ্য তখন বাড়িতে ছিলেন না। কোনও ভাবেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বিষয়টি নজরে আসার পরেই ধুবুলিয়া থানার ওসি সুমিত ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর ২ বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “তালিকায় এক বার বাবার ভাল নাম, এক বার ডাকনাম রয়েছে। ওঁদের পাকা বাড়ি আছে। তাই তালিকা থেকে দুটো নামই বাদ দিয়েছি।” এ দিন হাঁসাডাঙায় সিদ্ধার্থদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দরজা বন্ধ। বারবার ডাকাডাকির পরে জানালা খুলে এক তরুণী জানান, বাড়িতে কেউ নেই। ধুবুলিয়ার বিধায়ক তথা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস দাবি করেন, “সিদ্ধার্থ ভাল ছেলে। যারা সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করেছিল, তারাই হয়তো কোনও ভুল করে থাকবে।”
আবাস তালিকায় নাম ওঠা বেশ কিছু তৃণমূল নেতানেত্রীর পরিবারের সদস্য সম্প্রতি নাম কাটানোর জন্য নিজেরাই আবেদন করেছেন। নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডুর বোন তাঁদের অন্যতম। কিন্তু সিদ্ধার্থ বা তাঁর স্ত্রী সে পথে হাঁটেননি। তাতেই আরও সমালোচনার সুয়োগ পেয়ে গিয়েছে বিরোধীরা।
ধুবুলিয়ার বাসিন্দা তথা বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকারে বক্তব্য, “যদি কোনও ভাবে তালিকায় নাম উঠেও থাকে, ওদের তো নিজে থেকেই নাম কাটানোর জন্য আবেদন করা উচিত ছিল। সেটা ওরা করেনি। বিডিও গিয়ে ধরেছে। অর্থাৎ ওরা টাকাটা নিতে চেয়েছিল!”
এ দিন সিদ্ধার্থ ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বলেন, “দল যা বলার বলবে।” তার পর ‘ব্লকের মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy