Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Adhir Ranjan Chowdhury

হঠাৎ অধীরের সঙ্গে ‘সৌজন্য’ সাক্ষাৎ নীলুর

শহর রাজনীতিতে নীলরতনের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইতিমধ্যে ‘ভাব’ জমেছে অরিত মজুমদারের। সেই ‘ভাব’ লোক দেখানো হলেও ওঁদের মধ্যে এখন নীলরতন আঢ্যের প্রবেশ ‘অসম্ভব’, বলছেন তৃণমূলেরই শহর কর্মীরা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিদ্যুৎ মৈত্র
শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৪০
Share: Save:

বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে ‘সৌজন্য’ সাক্ষাৎ করে এলেন বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য। সে কথা স্বীকার করে অধীর চৌধুরী বলেন, “হঠাৎ দেখি নীলরতন জেলা কার্যালয়ে এসে হাজির। কেউ যদি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে তাকে কি চলে যেতে বলব?” তাঁদের সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন একাধিক জেলা কংগ্রেস নেতাও। তবে নীলরতনের সঙ্গে দলবদল বা রাজনীতি সংক্রান্ত কোনও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন অধীর। সাক্ষাতের কথা স্বীকার করে নীলরতনও বলেন “রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম সাংসদের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘ দিন ঘর করেছি অধীরের সঙ্গে। তাই কেমন আছে না আছে খোঁজ নিলাম আর কি।” যা নিয়ে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে জোড় জল্পনা। আর জল্পনা উসকে দিয়ে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, “নিলুদা’র ঘরে ফেরা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।”

দীর্ঘ দিন বসে থাকার পর চলতি বছরে স্বাধীনতা দিবসের দিন মান ভেঙে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল নীলরতন আঢ্যের। পুর প্রশাসকের পদ পাওয়ার শর্তে দলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেনের ছায়া সঙ্গী হতেও কসুর করেননি তিনি। সেই সময় শহরের ২৮টি ওয়ার্ডের আনাচে কানাচে কখনও রক্তদান, কোথাও বস্ত্রদান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঝালিয়ে নিয়েছিলেন নিজের জনপ্রিয়তা। সে কাজে তাঁর সঙ্গী ছিলেন কখনও অরিত, কখনও সেই সৌমিক। অথচ জেলা নেতৃত্ব দূর অস্ত, চার মাস কেটে গেলেও পুরসভার ‘পদ’ নিয়ে কোন টুঁ শব্দ শোনায়নি তৃণমূল ভবনও। মুলত যাদের সৌজন্যে তাঁর দলে ফেরা সেই দুই নেতা অরিত, সৌমিকও কুলুপ এঁটেছেন।

এ দিকে আসন্ন বিধানসভা ভোটের লক্ষে শহর জুড়ে মুখরিত তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি ‘বঙ্গধ্বনি’। সেখানেও দলের বৈঠকে ডাক পড়েনি প্রাক্তন এই কংগ্রেস কাউন্সিলরের। এমনকি কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকেও তাঁর নামোচ্চারণ করেনি কেউ। তাঁর কাছে আসেনি সরকারি কর্মসূচির প্রচারপত্র কিংবা তৃণমূলের ১০বছরের রিপোর্ট কার্ড। যদিও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের লিঙ্ক পেয়েছিলেন বলেই দাবি নীলরতনের। তাঁর দাবি, “দলের কর্মসূচিতেও ডেকেছেন চেয়ারম্যান। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকেও ছিলাম।” তবে দলের জেলা সভাপতি না ডাকায় অভিমান যে আবার দানা বেঁধেছে মনে, সে কথা নীলরতনের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে দলের সভাপতি কোনও বৈঠকে ডাকেন না। না ডাকলে আমি কি করে সেখানে যাই বলতে পারেন? মাঝে মধ্যে অরিত মজুমদারের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা ছাড়া আর কারও সঙ্গে কোনও কথা হয় না।”

শহর রাজনীতিতে নীলরতনের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইতিমধ্যে ‘ভাব’ জমেছে অরিত মজুমদারের। সেই ‘ভাব’ লোক দেখানো হলেও ওঁদের মধ্যে এখন নীলরতন আঢ্যের প্রবেশ ‘অসম্ভব’, বলছেন তৃণমূলেরই শহর কর্মীরা। ফলে বহরমপুরেই একঘরে নীলরতন। তবে দল বদলের কানাঘুঁষো শুনে নীলরতন বলেন, “আমি এখনও তৃণমূলের কর্মী। দল না ডাকলেও আমি আমার মত করে মানুষজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তা সত্ত্বেও স্থানীয় নেতারা আমাকে গুরুত্ব না দিলে আমাকে তো আমার রাস্তা একদিন বেছে নিতেই হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, “দলের একজন দায়িত্ববান নেতা উনি। উনিই তো কর্মীদের সঙ্গে দলের কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক করতে পারেন। সেটা তো চোখে পড়ছে না। তবে কেউ যদি দলে না থাকতে চান তাহলে আমাদের আর কি করার আছে?”

অন্য বিষয়গুলি:

Adhir Ranjan Chowdhury Congress TMC Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy