কাটোয়ায় মনমোহন সিংহ। ২০১১ সালের এপ্রিলে। ফাইল চিত্র।
এসেছিলেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। কিন্তু খোঁজ নিয়েছিলেন এলাকার সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের প্রয়াণে এমন স্মৃতিই ফিরে আসছে পূর্ব বর্ধমানের কয়েক জনের। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন এসেছিলেন কাটোয়ায় ভোটের প্রচার-সভায়। সামান্য সময়ের জন্য তাঁর সংস্পর্শে আসা মানুষজন বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু-সংবাদ পেয়ে শোকস্তব্ধ।
২০১১-র ২৩ এপ্রিল কাটোয়া বিধানসভার সে বারের কংগ্রেস প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন মনমোহন। ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। স্মৃতি হাতড়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে শোকাহত। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আমার হয়ে প্রচার করতে কাটোয়ায় এসেছিলেন। মনে আছে, তিনি আমাদের এলাকার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলি জানতে চেয়েছিলেন, পরিস্থিতির কথা শুনেছিলেন। পরে এখানকার মানুষের কথা তিনি বক্তব্যে তুলে ধরেছিলেন। বিশেষত, কাটোয়া-কালনার তাঁতিদের দুর্দশা নিয়ে তিনি সরব হয়েছিলেন।” তিনি জানান, এক বার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “তাঁর মতো বিদগ্ধ ও পণ্ডিত মানুষের সংস্পর্শে আসা সৌভাগ্যের।”
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন কাটোয়ার দিগন্ত পাল। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পা রাখতেই বুক দুরু-দুরু করছিল। কিন্তু তিনি মৃদু হেসে নমস্কার করে কথা বলতে শুরু করলেন। মনে হল, পণ্ডিত মানুষেরা সশব্দে নয়, নিঃশব্দেই উপস্থিতি বুঝিয়ে দেন।” কাটোয়ার জনসভার মঞ্চে সে দিন ছিলেন বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীও। তিনি বলেন, “আমার মতো এক জন কর্মীর সঙ্গেও তিনি কথা বলেছিলেন।’’ মঞ্চের কাছেই ছিলেন কাটোয়ার তখনকার কংগ্রেস নেতা, বর্তমানে তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ সাহাও। তাঁর কথায়, “গাড়ি থেকে নেমে প্রণববাবুকে ‘স্যর’ সম্বোধন করে মঞ্চের দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন।”
কাটোয়া স্টেডিয়ামে আসার আগে শ্রীখণ্ডে এনটিপিসি-র মাঠে (তখন পিডিসিএলের) মনমোহনের হেলিকপ্টার নেমেছিল। তাঁকে আমন্ত্রণ জানাতে যান কংগ্রেসের তৎকালীন জেলা সভাপতি আজিজুল হক মণ্ডল (বর্তমানে তৃণমূলে), প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বোরশেদ শেখ। তাঁদের স্মৃতিচারণা, “কুশল-পর্বের পরে মৃদু স্বরে জেলার পরিস্থিতি জানতে চান। আমরা বললাম, উনি শুধু শুনে গেলেন।” গাড়িতে ওঠার মুখে বড় ফাঁকা মাঠ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের তৎকালীন প্রধান দীপক মজুমদার বলেন, “জানিয়েছিলাম, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে চলেছে। উনি চলে গেলেন। সেই মাঠ এখনও ধু-ধু থেকে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy