ক্যারাটে প্রশিক্ষণ: হরিহরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ওঁদের মন্ত্র একটাই— করব, লড়ব, জিতব রে! সেই মন্ত্রকে পণ করেই ওঁরা ছুটছেন। ছুটছেন জিতবেন বলে। আর সেই জয়ের খিদেটা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে মেরি কম, দীপা কর্মকারেরা।
ক্রিকেট থেকে ফুটবল, সাইক্লিং, জিমন্যাস্টিক, ক্যারাটে সব কিছুতেই তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বাড়ির কাছেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। কেউ ঘুম থেকে উঠে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। একটাই লক্ষ্য—জয়ী হতে হবে। বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ষষ্ঠ বার সোনা জিতেছেন মেরি কম। নতুন ভল্টে বাজিমাত করে জার্মানিতে চলা আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকে ব্রোঞ্জ জিতেছেন দীপা কর্মকার। তাঁদের এই সাফল্য মুর্শিদাবাদের মেয়েদের আরও উৎসাহ জোগাচ্ছে।
ভগবানগোলার কিশোরী আক্তারুন খাতুন। ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার উজিয়ে বহরমপুরে আসে। প্রথমে দু’কিলোমিটার সাইকেল ঠেঙিয়ে ভগবানগোলা স্টেশনে। সেখান থেকে ট্রেনে বহরমপুর। এ ভাবেই পড়াশোনার ফাঁকে চলছে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ। আক্তারুন জানিয়েছে, ‘‘দীপা-মেরি কমকে দেখে আমি উৎসাহ পাই। আমি ক্রিকেটের ভক্ত। কিন্তু ঝুলন, মিতালিদের পাশে মেরি কম ও দীপা কর্মকারের ছবিও রেখেছি। ওঁরা পারলে, আমরাও পারব।’’
বহরমপুরের ওয়াইএম মাঠের কাছে বিবেকানন্দ মিশন ক্লাবে জিমন্যাস্টিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বহরমপুরের স্বর্ণময়ীর দশম শ্রেণির পড়ুয়া তৃষা হাজরা প্রশিক্ষণ নেন। তৃষা জানিয়েছে, ‘‘দীপা কর্মকার আমার আদর্শ।’’
বহরমপুরের বিবেকানন্দ মিশন ক্লাবের জিমন্যাস্টিকের প্রশিক্ষক প্রভাতকুমার সরকার বলছেন, ‘‘সাধারণ ঘরের মেয়েরা এখন জিমে ভাল সাফল্য পাচ্ছে। দীপার একের পর এক সাফল্য এই জেলার মেয়েদেরও উৎসাহ জোগাচ্ছে। মেয়েরা খেলাধুলোয় ক্রমশ এগিয়ে আসছে। এটা খুব ভাল লক্ষণ।’’
লালগোলার লস্করপুর হাইস্কুলে আত্মরক্ষার পাঠ দিতে সপ্তাহে দু’দিন ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই ব্যবস্থা করেছেন। স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া শবনম খাতুন, শিল্পী খাতুনেরা জানিয়েছে, ক্যারাটে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস আগের থেকে বেড়েছে।
বেলডাঙার দেবকুণ্ডু শেখ এআরএম গার্লস হাইমাদ্রাসার ছাত্রীরা সাইক্লিং-এ গত ২০১৫ সাল থেকে সাফল্য পাচ্ছে। সম্প্রতি পুণেতে জাতীয় স্তরের ‘জাতীয় মাউন্টেন সাইক্লিং চাম্পিয়নশিপ’-এ মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী সুরজাহান খাতুন ও তাঞ্জিলা খাতুন যোগ দিয়েছিল। সুরজাহান চতুর্থ হয়েছে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘‘রেসের জন্য আধুনিক সাইকেল না থাকা, আর্থিক সমস্যা-সহ নানা বাধা কাটিয়ে আমাদের মাদ্রাসার পড়ুয়ারা সাফল্য পাচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বেলডাঙার মির্জাপুরের মিলনতারা খাতুন একাধিক বার জাতীয় স্তরে সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিয়েছেন। মিলনতারা এখন আমাদের স্কুলের কোচ। ছাত্রীদের সাফল্যের পিছনে তাঁর বড় ভূমিকা আছে।’’ জয়ের লক্ষ্যে ছুটছে নবাবের জেলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy