শুনশান বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
শাস্তির ভয়েই হোক কিংবা সচেতনতায়, আরও কড়া বিধিনিষেধের প্রথম দিন জেলার মানুষ মোটের ওপর নিজেদের ঘরবন্দিই রাখলেন।
প্রশাসন এবং পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন জেলার অধিকাংশ এলাকাতেই সকালের পর রাস্তাঘাট শুনশান ছিল। বিক্ষিপ্তভাবে বিশেষ করে বহরমপুর, লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, নওদা, হরিহরপাড়ার কোথাও কোথাও সকালে নির্দিষ্ট সময়ের পরেও দোকান খোলা থাকার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ খবর পেয়ে গিয়ে সেগুলি বন্ধ করে দেয়। নতুন নিয়মে সকাল ৭টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য দোকান-বাজার খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সকালের ওই সময়ে বহরমপুর, হরিহরপাড়া, ডোমকল, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান, লালবাগ-সহ প্রায় সর্বত্রই দোকান-বাজারে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে কেউ কেউ সতর্ক থাকলেও অনেকেরই মুখে ছিল না মাস্ক। দূরত্ববিধিও শিকেয় ওঠে। এদিনই বহরমপুর স্টেডিয়ামে পরিবহণকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য শিবির খোলা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানেও শয়ে শ’য়ে প্রতিষেধক-প্রত্যাশীকে দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বহরমপুর থানার পুলিশ নিয়ম পালন করাতে রাস্তায় নেমে ১২ জন বিধিভঙ্গকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তেমনই জিয়াগঞ্জ, লালবাগ এলাকায় সময়ের পরেও দোকান খোলা রাখায় পুলিশ গিয়ে জোর করে সেগুলি বন্ধ করে দেয়। তবে এই অনিয়মের পাশাপাশি সচেতনতার ছবিও দেখা গিয়েছে কান্দি থেকে বেলডাঙা, লালবাগ থেকে বহরমপুর, লালগোলা থেকে জঙ্গিপুরের একাধিক জায়গায়। সেখানে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না বেরিয়ে বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই নিজেদের ঘরবন্দি রেখেছেন। জঙ্গিপুরে বিড়ি শিল্পতালুকও ছিল শুনশান। এদিন বিধিনিষেধ ঠিকমতো পালিত হচ্ছে কি না, তা দেখতে বহরমপুরের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখেন মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কে শবরী রাজকুমার। রেশন দোকান-সহ একাধিক জায়গায় ভিড় দেখলেই মানুষকে সতর্ক করে সরিয়ে দিয়েছেন খোদ এসপি। এদিনই এক সাংবাদিক বৈঠকে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ওয়াই রঘুবংশী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘বিধি ভঙ্গকারীদের প্রথমদিন সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হল। তবে একই ব্যক্তি দ্বিতীয়দিন নিয়ম ভাঙলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ করব।’’ তিনিও রাস্তায় বেরিয়ে নজরদারি চালান এদিন। এদিকে, এদিন ভোর ৬টা থেকে বিধি কার্যকর করার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের অনুরোধে প্রথমদিন বহরমপুরের পাইকারি বাজার খোলা ছিল ভোর ৪টে থেকেই। তবে নয়া বিধিনিষেধে বস্ত্র প্রতিষ্ঠান খোলা থাকা নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশ না আসায় ধন্দে ছিলেন চা পাতা বিক্রেতা, বস্ত্র ও জুতোর দোকানের মালিকরা। তবে শনিবার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে স্থির হয়েছে, চা পাতা বিক্রেতারা সকালে তিন ঘণ্টা দোকান খুলতে পারবেন। পোশাকের দোকান খোলা হবে দুপুর ১২টা থেকে তিনটে পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy