প্রতীকী ছবি।
ধন্দে পড়েছেন তাঁরা। দু’দিন আগেও তাঁদের রাজনৈতিক জীবনের শেষ কথা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। হাবেভাবে খোলাখুলিই তাঁরা কবুল করতেন, ‘দিদির চেয়েও দাদা বড়’! কিন্তু দলের দিকে অনাস্থার আঙুল তুলে সরকারি পদ-মন্ত্রিত্ব ছেড়ে বিদ্রোহ শুরু করতেই মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা শুভেন্দুর অধিকাংশ অনুগামী পড়েছেন ফ্যাসাদে— তা হলে, দাদা কি এ বার বিজেপি’তে?
জেলা তৃণমূলের এক তাবড় নেতা খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘সংখ্যালঘু প্রভাবিত এই জেলায় আর যা-ই হোক বিজেপি করে যে রাজনীতিতে টিকে থাকা যাবে না, তা স্পষ্ট। এই অবস্থায় শুভেন্দু বিজেপি-তে গেলে তাঁরা কী করবেন, ভেবে কুল পাচ্ছেন না দাদার ভাইয়েরা!’’
তৃণমূলের অন্দরের খবর, এই অবস্থায় দাদার অনুগামী বলে পরিচিত অনেক তৃণমূল কর্মীই ফের পুরনো দল কংগ্রেসে ফিরে যেতে পারেন, সেই সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের এক প্রভাবশালী নেতাও তা মেনে নিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘‘এখন অনেকেই আমাদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ তৈরি করছেন। ছ’মাস আগেও যাঁদের সঙ্গে দেখা হলে ফুটপাত বদল করতেন, তারা এখন ফোন করে আলাপ ঝালানোর চেষ্টা করছেন।’’ তা যে নিছক অভিযোগ নয়, শুভেন্দু অনুগামী এক তৃণমূল নেতার কথাতেই তা স্পষ্ট।
ডোমকলের ওই নেতা বলছেন, ‘‘এ তো সহজ কথা যে মুর্শিদাবাদে রাজনীতি করতে হলে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে লাভ নেই। শক্তিপুরের হুমায়ুন কবীর তো লোকসভায় প্রার্থীও হল, মাথা মুড়িয়ে শেষতক সেই ফিরতে হল তৃণমূলে। তবে জলে থেকে তো কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করা যায় না, তাই তৃণমূলে থেকে দিদির অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে টিকতে পারব না। তাই মান রাখতে পুরনো দল কংগ্রেসেই ফিরতে চাইছেন আমার মতো অনেকেই।’’ শুভেন্দু দলে না থাকলে তাঁদের মাথার ওপরেও কোনও ছায়া থাকবে না। তাই তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে পড়ার ভয় রয়েছে ওই দাদা-অনুগামীদের। এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে কংগ্রেস।
জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের অনেকেই আমাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছেন। আমরাও চাইছি ঘরের ছেলে ঘরে ফিরুক।’’
রানিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ফিরোজা বেগম বলেন, ‘‘শুভেন্দু বিজেপি-তে গেলে এই জেলায় তাঁর অনুগামীদের বড় একটা অংশ যে কংগ্রেসে আসবে ,তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ যা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলছেন, ‘‘যারা তৃণমূল করে তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করেন। ফলে কে গেল, কে এল তাতে কিছু যায় আসে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy