Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Jalangi

লকডাউনে মানুষের পাশে থাকার দাবিই ভরসা কংগ্রেসের

অন্যদিকে  বাম নেতারা বলছেন তাঁদের যে সাংগঠনিক ফাঁকফোকর তৈরি হয়েছিল তারা সেটা মেরামত করে ফেলেছে এই সময়ের মধ্যে প্রতিটি কর্মী এবং সাধারণ মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছে তারাও।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
জলঙ্গি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৫২
Share: Save:

পদ্মাপাড়ের এই আসনটি বামেদের দুর্গ বলেই পরিচিত। বাম জামানার শুরু থেকেই এখানে বিধানসভার আসনটি নিজেদের দখলে রেখেছে সিপিএম। আর তাদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম যেখানে ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়েছিল শাসক তৃণমূলের প্রার্থীকে, সেখানেই কয়েক বছর পর লোকসভার নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে তাদের। দ্বিতীয় তৃতীয় নয়, একেবারে চতুর্থ স্থানে পৌঁছে গিয়েছে সিপিএম। আশ্চর্যজনক ভাবে সিপিএমের থেকেও বেশি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। ফলে জলঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি যে একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক মহলের ধারণা এখানেও প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি হয়ে দাঁড়ালে অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না। জেলা বিজেপির নেতা শাখারভ সরকার বলছেন, ‘‘এবার লড়াই হবে আমাদের সঙ্গে।’’

যদিও কংগ্রেসের দাবি লোকসভা নির্বাচনে তারা অনেকটাই এগিয়ে আছে সিপিএম এবং বিজেপির থেকে। তাছাড়া লকডাউনের সময়কালে তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ফলে এ বার লড়াইয়ের ময়দানে তারা অনেকটাই এগিয়ে থাকবে বলে মনে করছে তাঁরা।

অন্যদিকে বাম নেতারা বলছেন তাঁদের যে সাংগঠনিক ফাঁকফোকর তৈরি হয়েছিল তারা সেটা মেরামত করে ফেলেছে এই সময়ের মধ্যে প্রতিটি কর্মী এবং সাধারণ মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছে তারাও। মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, আদতে তারাই মানুষের জন্য লড়াই করতে পারে। জলঙ্গির সিপিএম নেতা প্রাক্তন বিধায়ক ইউনুস সরকার বলছেন, "আমরা স্বীকার করছি একটা বড় সাংগঠনিক দুর্বলতা তৈরি হয়েছিল আমাদের মধ্যে। মানুষ ভেবে নিয়েছিল আমাদের ভোট দিয়ে লোকসভায় কোনও লাভ নেই, তার ফলেই লোকসভা নির্বাচনে এমন একটা ফল হয়েছে। আমরা লোকসভার পরে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি যেভাবে সাড়া পেয়েছি তাতে আগামী নির্বাচনে জলঙ্গি বিধানসভা আমাদের দখলেই থাকবে।’’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা সিপিএমের বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল দলবদল করলেও সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ফলে তৃণমূল জলঙ্গি বিধানসভায় খুব বেশি লড়াই দিতে পারবে না। তা ছাড়া নিজেদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলকে ভোগাতে পারে বলেও খোদ তৃণমূলেরই একাংশের অনুমান। যদিও বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাকের দাবি, ‘‘জলঙ্গিতে বর্তমানে যে পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। বিরোধীরা যে যাই বলুক মানুষ উন্নয়নের সঙ্গে থাকবে।’’ আর কংগ্রেস নেতা আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘জলঙ্গিতে এই মহামারির সময়ে মানুষ কেবল আমাদেরই পাশে পেয়েছে, ফলে বিধানসভায় তাদের একটা বাড়তি সুবিধা থাকবে কোনও সন্দেহ নেই। আর বাম কংগ্রেস জোট হলে পদ্মা পার হয়ে যাবে তৃণমূল।

পদ্মার পাড় ঘেঁষা জলঙ্গির রাজনীতিতে বারবারই উঠে এসেছে পদ্মা। কখনও তার ভাঙন কখনও আবার তার উপচে যাওয়া জল আবার কখনও জেগে ওঠা চর। এসব নিয়েই বরাবর হয়েছে রাজনীতি। রানিনগরের মত এখানেও একটা সময় চোরাকারবারের রমরমা ছিল। আর চোরাকারবারের হাত ধরেই অর্থনীতিতেও বলীয়ান হয়ে উঠেছিল জলঙ্গি। কিন্তু সীমান্তের কড়াকড়ি আর পদ্মার ভাঙন একেবারে মাজা ভেঙে দিয়েছে জলঙ্গির। বর্ধিষ্ণু অনেক গ্রাম ধুয়ে গিয়েছে পদ্মার জলে। বামেদের হাত ধরে আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন, এ বারও কী সেটাই হবে?

অন্য বিষয়গুলি:

Jalangi Vidhan sabha Congress CPM BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy