Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Higher Secondary Examination 2024

ছয়টি অস্ত্রোপচার সামলে উচ্চ মাধ্যমিকে সৃজনী

সৃজনীর বাবা সঞ্জিত সেন শান্তিপুরে একটি ডাকঘরের পোস্টমাস্টার। মা মধুমিতা সেন শান্তিপুরের হিন্দু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

শান্তিপুরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সৃজনী সেন, নদিয়ার শান্তিপুর।

শান্তিপুরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সৃজনী সেন, নদিয়ার শান্তিপুর। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৭
Share: Save:

জন্মগতভাবে একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ছয়টি বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তার পরেও শুধু এগিয়ে চলার জেদকে সম্বল করে এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে শান্তিপুরের সৃজনী সেন।

সৃজনীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভেলো কার্ডিও ফেসিয়াল সিন্ড্রোমে আক্রান্ত সে। জন্ম থেকেই মুখ এবং মুখের ভেতরের অংশ ছিল অসম্পূর্ণ। মুখের তালু থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গ ছিল না। এ ছাড়াও স্নায়ুঘটিত নানা সমস্যাও ছিল। নানা সময় একাধিক অস্ত্রোপচার করে তা ঠিক করতে হয়েছে। মস্তিষ্কের মধ্যভাগে জল জমে রয়েছে। এখনও তা ঠিক করা যায়নি। হাতের আঙুল সহজে নড়াচড়া করে না। হাঁটাচলায় সে ভাবে সমস্যা না-থাকলেও হাত দিয়ে কোনও কাজ করতে, লিখতে অসুবিধা হয় তার। ভাল ভাবে কথাও বলতে পারে না। এর পাশাপাশি রয়েছে নানা মানসিক সমস্যা।

সৃজনীর বাবা সঞ্জিত সেন শান্তিপুরে একটি ডাকঘরের পোস্টমাস্টার। মা মধুমিতা সেন শান্তিপুরের হিন্দু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। হিন্দু প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় সৃজনীর। পরে ভর্তি হয় দুর্গামণি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই প্রথম বিভাগে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কলা বিভাগে সে ভর্তি হয় শান্তিপুরের তন্তুবায় সঙ্ঘ উচ্চ বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন পড়েছে শান্তিপুরের শরৎকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। মুখে একাধিক প্লাস্টিক সার্জারি বিভিন্ন সমস্যার কারণে কথা বলতে সমস্যা যেমন রয়েছে, পাশাপাশি আঙুলের সমস্যার জন্য লিখতে পারে না। তবে পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ছিল বরাবরের। তার পছন্দের বিষয় ভূগোল। তবে শারীরিক সমস্যার কারণে অবশ্য ভূগোল নিয়ে পড়াতে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন পরিবারের লোকজন। পড়াশোনার পাশাপাশি নাচের প্রশিক্ষণ নেয় সে। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রাইটার নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে সৃজনী। রাইটার নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে সে। সৃজনীর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপ সাহার পাশাপাশি স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং দুই গৃহশিক্ষক কাশীনাথ রায়, মৌসুমী সেনগুপ্ত সব সময় পাশে থেকে তাকে পড়াশোনার ব্যাপারে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন বলে জানাচ্ছেন পরিবারের অন্যেরা।

সৃজনীর মা মধুমিতা সেন বলেন, ‘‘যতই প্রতিবন্ধকতা থাক আমাদের লক্ষ্য মেয়েকে আর বড় করে তোলা। ও যতদূর পড়তে চায় পড়াব। এই লড়াইটা তো আমাদেরও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Santipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy