Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
TMC leader murder

তৃণমূল নেতা খুনে তরজা

মামলা রুজু করে রাজকুমারকেও গ্রেফতার করা হয়। অবশ্য দু’মাসের মধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিন পায় সে। এ দিন সকালে সেই ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, চার জন শ্রমিক ছাড়া আর কেউ নেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৭
Share: Save:

এফআইআর

সকালেই নওদা থানায় গিয়ে ১০ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মতিরুলের স্ত্রী, নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা বিশ্বাস। তাতে নাম রয়েছে নদিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য টিনা ভৌমিক সাহা, নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি সফিউজ্জামান শেখ ওরফে হাবিব, নওদা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফিরোজ শেখ, সাইফুল মণ্ডল ওরফে গুটু এবং ইটখোলা মালিক খালেক কবিরাজ ওরফে রাজকুমারের। হাবিব এই রাজকুমারের ইটভাটার অংশীদার।

টিনা হাবিব

খুনের পরেই নারায়ণপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী তথা তৃনমূল নেতা সাজিজুল হক ওরফে মিঠু দাবি করেছিলেন, খুনের পিছনে টিনা ও হাবিবের হাত আছে। এ দিন বহরমপুর গিয়ে তেহট্টের বিধায়ক (থানারপাড়া তাঁরই নির্বাচনী এলাকায় পড়ে) তাপস সাহাও দাবি করেন, “এই ঘটনায় টিনার সঙ্গে হাবিবও যুক্ত আছে বলে সন্দেহ করছি। দু’জনকে করিমপুর, থানারপাড়ায় ঘুরতেও দেখা গিয়েছে।’’ এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় রয়েছেন জানিয়ে ফোনে টিনা পাল্টা বলেন, “আমি আইনি লড়াইয়ে যাব। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কখনই কাম্য নয়। ওদের কথায় আমি কর্ণপাত করি না।” হাবিব দিনভর ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি। ঘটনাচক্রে তিনি মুর্শিদাবাদের সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান আবু তাহের খানের ভাগ্নে। তাহের দাবি করেন, " উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কিছু নামে অভিযোগ করা হচ্ছে।” ফিরোজ বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে মতিরুলের সুসম্পর্ক ছিল।” এর আগে একটি সংঘর্ষে গুলি ছোড়ার মামলায় গুটু এখনও পলাতক।

রাজকুমার ইটভাটা

পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকার রাজনৈতিক কর্তৃত্ব এবং ইটভাটার দখলদারিতে মতিরুলের কর্তৃত্ব শেষ করতে ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠছিল খালেক কবিরাজ ওরফে রাজকুমার। নদিয়ার আজলামপুরের যে ইটভাটায় হাবিব তার অংশীদার, সেটির দখল নিয়ে সংঘাত ঘোরালো হয়ে ওঠে। মতিরুলকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এই সন্দেহে বেশ কয়েক মাস আগে এক জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজকুমারের নাম জানা যায়। এর পর মামলা রুজু করে রাজকুমারকেও গ্রেফতার করা হয়। অবশ্য দু’মাসের মধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিন পায় সে। এ দিন সকালে সেই ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, চার জন শ্রমিক ছাড়া আর কেউ নেই। সব ঘর তালাবন্ধ। কিছুটা দূরে রাজকুমারের বাড়ির মূল ফটকে কলিং বেল বাজিয়ে বহু ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়া মেলেনি। সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের তার বড় ছেলের পরীক্ষা থাকলেও সে তা দিতে যায়নি।

মহুয়া তাপস

দুপুরে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মতিউরের মৃতদেহ নিতে আসেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। সঙ্গে শতাধিক আত্মীয়-পরিজন অপেক্ষা করছিলেন। মহুয়া ও টিনার সঙ্গে তাপসের ‘সুসম্পর্ক’ নদিয়া জেলা তৃণমূলে সর্বজনবিদিত। ফলে গোষ্ঠী কোন্দলের প্রসঙ্গও ওঠে। তবে তাপস এই খুনের জন্য টিনাকে প্রায় সরাসরি দায়ী করেও দাবি করেন, “গোষ্ঠী নয়, বিষয়টি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। টিনা মিঠু আর মতিউরকে বিজেপি করতে বলেছিল। কিন্তু ওরা আমার হয়ে ভোট করে।” আর মহুয়ার মতে, “এটা কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হয়েছে।” টিনার বিরুদ্ধে রিনার দায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উনি খুব আঘাত পেয়েছেন। এখন আবেগে নিশ্চয়ই বলতে পারেন।... আমি বার বার বলছি, এটা কোনও ছোট গোষ্ঠী কোন্দল মেটাবার বা নিজের কোনও ব্যক্তিগত ঝাল ঝাড়ার জায়গা নয় এবং সময়ও নয়। যাঁরা এটা করছেন, তাঁদের বলব, প্লিজ এটা করবেন না।’’

কপি ও ছবি: সাগর হালদার, মফিদুল ইসলাম, সামসুদ্দিন বিশ্বাস ও গৌতম প্রামাণিক। গ্রাফিক: প্রবাল ধর

অন্য বিষয়গুলি:

TMC leader murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy