প্রতীকী ছবি।
শাসক দল বলেই কি সাত খুন মাফ? ফরাক্কার সরকারি কিসান মান্ডিতে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম ও কংগ্রেস।
রবিবার বল্লালপুরের এই কৃষক বাজারে দিনভর চলে ওই সম্মেলন। ছিল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনও। তাতে উপস্থিত ছিলেন দলের দুই সাংসদ-সহ জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, সরকারী কিসান মান্ডিতে এদিন সভা বা সম্মেলন করার কোনও অনুমতি দেননি তাঁরা। আর তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লকের সভাপতি এজারত আলি বলছেন, ‘‘বিডিও কিষান মান্ডির সম্পাদক। ফরাক্কার বিডিও-র অনুমতি নিয়েই কিসান মান্ডিতে সম্মেলনের আয়োজন করেছেন তাঁরা।’’ সরকারি কিসান মান্ডিতে যে এদিনের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য কোনও লুকোছাপা ছিল না। ব্যানার, ফেস্টুন-সহ প্রতিনিধিদের বুকে আঁটা ছাপানো ব্যাজেও সভার স্থান হিসেবে লেখা ছিল কৃষক বাজারের নাম।
কিন্তু বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের বক্তব্য, সরকারি ভবনে এ ভাবে কর্মী সম্মেলন করা যায় না। ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হকের কটাক্ষ, ‘‘ফরাক্কায় প্রশাসন ও শাসকদল এক হয়ে গিয়েছে। তাই এ ভাবে যা খুশি তাই করছে।’’ আর সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘‘ক্ষমতার অপব্যবহার একেই বোধহয় বলে। রক্ষে ব্লক অফিস দখল করে ওই সম্মেলন হচ্ছে না।’’
কৃষক বাজারে রাজনৈতিক সম্মেলন করার অনুমতি কী করে দিলেন, তা জানতে বিডিওকে শনিবার ও রবিবার বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে সভাস্থলের একাধিক ছবি পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু এদিন রাত পর্যন্ত তা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। পরে জেলার কিসান মান্ডির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সৌম্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রশাসন সরকারি কৃষক বাজারে সম্মেলন করার অনুমতি দেননি কোনও রাজনৈতিক দলকেই।’’
কৃষক বাজারের নিয়ন্ত্রণে থাকা জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সম্পাদক সইফুদ্দিন মোল্লাও বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অধীনে চলে এই কৃষক বাজার। আমাদের তরফে কৃষক বাজারে সভা করার অনুমতি দিইনি কাউকে। তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির কথায়, ‘‘কৃষক বাজার ফাঁকা পড়ে আছে। কাজে লাগে না। তাই সেখানে প্যান্ডেল করে সম্মেলন করেছি। এতে দোষের কি আছে?’’
এদিন ফরাক্কার বিধানসভা ভিত্তিক এই সম্মেলনে ব্লকের বিভিন্ন স্তরের নেতারা হাজির থাকলেও কর্মীদের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত নগণ্য। ফাঁকা সভাস্থল নজর এড়ায়নি জেলা নেতাদেরও। ফরাক্কায় তৃণমূলের সংগঠন যে দুর্বল, তা মেনে নিয়েছেন এদিনের সম্মেলনে হাজির তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খানও। তিনি বলেন, ‘‘দলের কোথায়, কী দুর্বলতা খোঁজার পাশাপাশি দলে থেকেও যে সব নেতা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কঠোর পদক্ষেপ নেবে দল।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই মুর্শিদাবাদ জেলায় ব্লক কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে না, সেই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘এত বড় দল। তাই ঠিক লোককে ঠিক জায়গায় বসাতে চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। সেই কারণেই কমিটি ঘোষণায় একটু সময় লাগছে।’’ জেলার ২২টি বিধানসভার মধ্যে রবিবার পর্যন্ত তৃণমূলের ১৯টি বিধানসভায় বুথভিত্তিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। তবে কিসান মান্ডিতে দলের সভা করা নিয়ে মন্তব্য করেননি। বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে দলের ব্লক সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy