নশিপুরের রাজবাড়ি। —ছবি : সংগৃহীত
জৌলুস হারিয়েছে, তবু আজও প্রথা মেনে পালন হয়ে আসছে ঝুলন উৎসব। নশিপুর রাজবাড়ি ও আখড়াতে পালিত হচ্ছে ঝুলন উৎসব। পাঁচ দিন ব্যাপী এই ঝুলনকে কেন্দ্র করে বসেছে মেলা। রাম, হনুমান, রাধা কৃষ্ণকে সাজিয়ে ঝুলন উৎসব উপলক্ষে দোলনায় দোলানো হয় নশিপুর রাজবাড়িতে। নশিপুর আখড়াতেও পালিত হয় ঝুলন উৎসব। আখড়া চত্বর থাকে নানা রঙের আলো দিয়ে সাজানো। থাকে সাধারণ মানুষের ভিড়। আখড়ার বিগ্রহগুলিকে সাজানো হয়। চলে যাত্রা অনুষ্ঠান। নশিপুর রাজবাড়িতেও চলে কীর্তন, বাউল অনুষ্ঠান। তা দেখতে রাজবাড়ি ও আখড়াতে ভিড় করেন জেলার মানুষ। অন্য জেলা থেকেও নশিপুর রাজবাড়ি ও নশিপুরের আখড়াতে ঝুলন দেখতে আসেন সাধারণ মানুষ। ঝুলনকে কেন্দ্র করে নশিপুর রাজবাড়ি ময়দানে বসে মেলা, তাতে ভিড় করেন মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা। রাখি পূর্ণিমার আগের একাদশী তিথি থেকে রাখি পূর্ণিমা অবধি চলে ঝুলন উৎসব।
নশিপুর রাজবাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা রতন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুশো বছরেরও বেশি পুরনো রাজবাড়ির এই ঝুলন উৎসব। রাজা রঞ্জিত সিং-এর আমল থেকে এই ঝুলন উৎসব হয়ে আসছে। ঝুলন যাত্রা উপলক্ষে ভগবান রামচন্দ্রর বিগ্রহকে অতি কাছ থেকে দেখতে পাওয়া যায়। রাধা, কৃষ্ণ, রাম, সীতা, হনুমানকে দোলনায় বসিয়ে একাদশী থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত দোলানো হয়। বহু দর্শনার্থী তা দেখতে আসেন। নাট মন্দিরে হয় কীর্তন, বাউল গান।’’ বাউল ও কীর্তন পরিবেশনে মায়াপুর, নবদ্বীপ থেকে শিল্পীরা আসেন বলে তিনি জানান।
নশিপুর আখড়ার বর্তমান সেবায়েত মহন্ত রাঘব দাস আচারী বলেন, ‘‘রামানুজ সম্প্রদায়ের অনুগামী মহন্ত লক্ষণ দাস আচারী প্রথম ১৭৫৮ সালে ঝুলন উৎসব চালু করেন। সেই থেকে আজও হয়ে আসছে প্রাচীন এই ঝুলন উৎসব।’’ ঝুলনকে কেন্দ্র করে যাত্রা, কীর্তন হয় বলে জানান রাঘব দাস আচারী। নশিপুর রাজবাড়ি ময়দানে বসেছে মেলা। মেলায় তেলেভাজার দোকান দিয়েছেন জঙ্গিপুর থেকে আসা সঞ্জয় প্রামাণিক, দীপক প্রামাণিকরা। তাঁদের কথায়, গত বছরে যে পরিমাণ ভিড় হয়েছিল এ বারে সে রকম ভিড় নেই। লোক সংখ্যাও কম। মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, "মেলায় আগে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসত। ঝুলন উপলক্ষে আগে যাত্রা, আলকাপ অনুষ্ঠানগুলি হত। আজও ভিড় হয় ঝুলন দেখতে রাজবাড়ি ও আখড়াতে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy