গত ছ’মাসে সাতবার!
প্রতিবার প্রায় একই কায়দায় টেলিফোন এক্সচেঞ্জে সফল ভাবে লুঠতরাজ চালিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু, এত দিনেও কোনও ঘটনাতে কেউ গ্রেফতার হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও উঠছে।
টেলিকম কর্তাদের অভিযোগ, গত ছ’মাসে মোহনা কান্দি, নবগ্রামের চাণক ও লালগোলার বাখরপুর, হোসনাবাদ, রঘুনাথগঞ্জের বাড়ালা, সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুর ও সুতির আহিরণ-সহ ৭টি এক্সচেঞ্জ নৈশ প্রহরীর মাথায় বন্ধুক ঠেকিয়ে লুঠ করেছে দুষ্কৃতীরা। সর্বত্রই পিস্তল ও বন্দুক ছিল তাদের হাতে। লোকালয়ে ঘনবসতির মধ্যে গাড়ি ভিড়িয়ে ঘণ্টা খানেক লুটপাঠ চালিয়ে গাড়িতে মালপত্র চাপিয়ে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ‘অপারেশন’ চলাকালীন রাতে কোথাও কোনও পুলিশি টহলদারি নজরে আসেনি বলে অভিযোগ টেলিকম কর্তাদের।
এক কর্তার কথায়, ‘‘ডাকাতির সময় দুষ্কৃতীরা এক্সচেঞ্জের কন্ট্রোল কার্ড নিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ বাজারে তা বিক্রি হয় না। দুষ্কৃতীরা নিয়ে যাচ্ছে পুরোনো ব্যাটারি। আহিরণ এক্সচেঞ্জ থেকে দুষ্কৃতীরা ৪৫টি পুরোনো ব্যাটারি নিয়ে গিয়েছে। বাজারে যার দাম বড় জোর ১০ হাজার টাকা!’’ সব মিলিয়ে লাখ দেড়েক টাকার মালপত্র লুঠ করতে গভীর রাতে গাড়িতে এসে দীর্ঘ ক্ষণ লুটপাঠ চালানোর ঝুঁকি নেওয়ার পিছনে অন্য রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন বিএসএনএল কর্তারা। আর্থিক ক্ষতির চেয়েও ওই সব এলাকায় অচল হয়ে পড়া টেলিসংযোগ ব্যবস্থা ফের চালু করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
এই মুহূর্তে আহিরণের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেলি সংযোগ দিচ্ছে বিএসএনএল। ডাকাতির জেরে সেই কাজে সমস্যা তৈরি হয়েছে। মুর্শিদাবাদ টেলিকম ডিভিসনের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার সাধনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে এফআইআর করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছি। কিন্তু এখনও একটি ডাকাতিরও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। কেউ ধরাও পরেনি। উদ্ধার হয়নি লুঠ হওয়া মালপত্রও।’’ পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে কোনও তথ্য দিয়ে সাহায্য করা হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ।
শুক্রবার রাতে আহিরণ টেলিফোন এক্সচেঞ্জে ডাকাতির ঘটনা আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে জানানো হয় সকাল ৬টা নাগাদ। সামান্য রাস্তা পেরিয়ে পুলিশ আসে সকাল ন’টার পরে। পুলিশের ঢিলেঢালা হাবভাবে উদ্বেগ্নে টেলিকম কর্তারা। আহিরণ এক্সচেঞ্জে যে ভাবে দুষ্কৃতীরা বাড়ির পিছনের একটি টাওয়ার বেয়ে ছাদে উঠে দরজা ভেঙে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এক্সচেঞ্জে ঢুকেছেন তাতেও সকলেই নিশ্চিত ওই বাড়িতে ঢোকার সব পথঘাট দুষ্কৃতীদের জানা ছিল!
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে কাননের অবশ্য দাবি, ‘‘লুটের ঘটনায় বহরমপুর থেকে পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের সঙ্গে জঙ্গিপুরের দুষ্কৃতীরাও যুক্ত।’’ সুতি থানার ওসিকে ওই দুষ্কৃতীদের নাম, পরিচয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আহিরণের ঘটনায় ওদের যোগ রয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy