আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তের এপারে থাকা লোকজন। নিজস্ব চিত্র।
অগস্টের গোড়ায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকেই সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবর আসতে শুরু করেছিল। সনাতনী সন্ন্যাসী গ্রেফতারের পর সেই পরিস্থিতি আরও অনেক খারাপ হয়েছে বলে খবর আসতে শুরু করেছে। তাতে সীমান্তের এ পারে থাকা আত্মীয়বন্ধুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
হোয়াটসঅ্যাপ কলে যোগাযোগ করা গেল রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরের কয়েক জন বামলাদেশি হিন্দুর সঙ্গে কথা জানা গেল, তাঁরা অনেকেই চাপের মধ্যে রয়েছেন। রাজশাহীর নারায়ণপুরে বাঘা গ্রামে থাকেন করিমপুরের আনন্দপল্লির বাসিন্দা লক্ষ্মণ ঘোষের আত্মীয়েরা। সেখানে তাঁরা চার পুরুষের বাসিন্দা, পাঁচ ভাই এক সঙ্গে থাকেন। তাঁরা জানান, ভারতে চলে না আসা পর্যন্ত তাঁদের পায়ের তলায় মাটি নেই বলে মনে হচ্ছে। জুন-জুলাইয়ের অস্থিরতার সময়ে তাঁদের মনে হয়নি যে বাংলাদেশে আর স্থায়ী ভাবে থাকা যাবে না। যদিও এখনও কেউ তাঁদের সরাসরি মারধর করেনি বা
হুমকি দেয়নি।
রাজশাহীর আর বাসিন্দা বলেন, “আমাদের পরিবারের বেশ কয়েক জন সরকারি চাকরি করে। বাজার-হাটে গেলে এখন লোকে টিপ্পনী কাটছে, ‘চাকরি কত দিন থাকবে রে!’ এখনও আমাদের উপর আক্রমণ হয়নি ঠিকই, কিন্তু অসহনীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন বলে কিছু নেই।” কুষ্টিয়ার এক বাসিন্দা আবার বলেন, “মাফ করবেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বললে আমার জান যাবে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় সমাজমাধ্যমে দু’এক কথা পোস্ট করে তিন দিন বাড়ি থেকে বেরোতে পারিনি।”
মেহেরপুরের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, মাঝে-মাঝেই রাতে তাঁদের বাড়িতে ইট পড়ছে। দরজায় লাথি মারা হচ্ছে। তাঁর দাবি, “থানাতে ফোন করেছিলাম। পুলিশ বলল, এই মুহূর্তে কিছু করা সম্ভব নয়। চুপ করে বাড়িতে থাকুন।” একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কুষ্টিয়া ও ঢাকার কিছু মুসলিম বাসিন্দা করিমপুরে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সম্প্রীতি রক্ষার বিষয়ে তাঁরা বরাবরই আগ্রহী। তাঁদেরও অনেকে জানাচ্ছেন, সে ভারত এক জন ‘খুনি মহিলা’কে আশ্রয় দিয়েছে তাদের প্রতি প্রীতি দেখাতে গেলে পিঠে বস্তা বাঁধতে হবে অর্থাৎ মার খেতে হবে বলে তাঁদের শাসানো হয়েছে। শুধু হিন্দু নয়, প্রগতিশীল মুসলিমেরাও রোষের
মুখে পড়ছেন।
হোগলবেড়িয়ায় কাঁটাতারের বেড়ার ও-পারে থাকা চর মেঘনা গ্রামের একশো কুড়ি ঘর মানুষও চিন্তায় রয়েছেন। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সুমিত্রা মাহাতো বলেন, "আমরা কাঁটাতারের বেড়ার পরে অর্থাৎ বাংলাদেশের দিকে থাকি। ফলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গ্রামের মানুষ চিন্তায় আছে। তাঁদের অনেকের নিকটাত্মীয় ও-পারে কুষ্টিয়া এলাকায় রয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপ কলে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে, গ্রেফতার হওয়া সন্ন্যাসীর পক্ষ নিয়ে তাঁরা যেন কোনও মন্তব্য না করেন।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy