Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Murder

শ্বাসরোধ করে মেরে আগুন, দাবি ভাইয়ের

মঙ্গলবার নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির হয়েছিলেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২১ ০৭:২০
Share: Save:

পুতুল গড়ার কারিগর সুশান্ত ঘোষ খুনের মামলায় নবদ্বীপ আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন মৃতের ভাই সুবল ঘোষ।

গত ২১ জুন, সোমবার সকালে নবদ্বীপ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপনগর রুদ্রপাড়ায় বাড়ির উঠোনে সুশান্তের অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন সুবল। মৃতের স্ত্রী মল্লিকা ঘোষ ও তাঁর বাপের বাড়ির মোট চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছেন তিনি। চার জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছেন। মঙ্গলবার নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির হয়েছিলেন তিনি।

সুবলের অভিযোগ, “বৌদি মল্লিকা ঘোষ দাদার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। পর প্রমাণ লোপাটের জন্য গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে দাদার উপর অত্যাচার হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত মেরেই ফেলল ওকে।” পরিবারিক সূত্রের দাবি, কিছুদিন ধরেই সুশান্তের পরিবারে অশান্তি চরমে উঠেছিল। আদতে হুগলির বলাগড়ের বাসিন্দা সুশান্তের সঙ্গে বছর দশেক আগে বিয়ে হয়েছিল নবদ্বীপ ফাঁসিতলার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ পালের মেয়ে মল্লিকার। সুবলের অভিযোগ, “বিয়ের মাসখানেক পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। দাদাকে নানা রকম ভয় দেখিয়ে নবদ্বীপে নিয়ে চলে আসে ওর স্ত্রী। কিছু দিন পর নবদ্বীপে ওকে একটি পুতুলের কারখানা করে দেয় ওর শ্বশুর। ওই কারখানায় একটি ছেলেকে কাজে নেওয়া হয়। সেই ছেলেটির সঙ্গে বৌদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দাদা প্রতিবাদ করতেই শুরু হয় অত্যাচার। দাদারশাশুড়ি সরস্বতী পাল, শ্বশুর রবীন্দ্রনাথ পাল এবং শালা রণজিৎ পাল সকলে মিলে অত্যাচার শুরু করে।”

প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, কারখানার ওই কর্মী মল্লিকার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করত। এক দিন গভীর রাতে প্রতিবেশীরা তাকে আটকে পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন। সুবলের অভিযোগ, “এর পর দাদার উপরে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। এমনিতে করোনার জন্য দাদার রোজগার কমে গিয়েছিল। ওর শাশুড়ি ওকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘যেখান থেকে পারিস রোজগার করে আনবি।’ দাদা পাড়ার লোকের কাছ থেকে একশো টাকা ধার নিয়ে বলাগড়ের বাড়িতে আসে। দু’দিনের মাথায় বৌদি মেয়েকে দিয়ে ফোন করিয়ে ওকে নবদ্বীপে
ডেকে পাঠায়।”

মৃত্যুর আগের দিন, রবিবার রাতে মাকে ফোন করে সুশান্ত যা হোক একটা কাজের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। সুবলের কথায়, “মায়ের ফোনে দাদার শেষ কথা ছিল ‘এখানে আর পারছি না। আমি চলে যাব।’ কিন্তু দাদার কথা শেষ হওয়ার আগেই ফোনটা কেউ সম্ভবত কেড়ে নেয়। তার পর থেকে অনেক বার চেষ্টা করেও দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। হয়ত এই কথা বলার অপরাধে ওই রাতেই দাদাকে খুন হতে হল। পর দিন সকালে আমরা যখন খবর পাই, তখন সব শেষ।”

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০ জুন রবিবার সারা দিনই প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। বেশির ভাগ লোকজন ঘরেই ছিলেন। সোমবার সকালে তাঁরা হঠাৎ চিৎকার শুনে গিয়ে দেখেন, সুশান্তর দগ্ধ মৃতদেহ উঠোনে শোয়ানো। এই ঘটনায় বারবার নাম আসা কারাখানার ওই কর্মীর সন্ধান করছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy