এআরসি ও মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামপন্থীরা। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে প্রচার মিছিল। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
আসন্ন পুরভোটের আগে ধর্মঘটকে ঘিরে তৈরি হয়েছে সম্ভাব্য শক্তি পরীক্ষার আবহ। বামেরা ধর্মঘট সফল করতে পুরোপুরি ঝাঁপাবে, বলাই বাহুল্য। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও বিজেপি নেতৃত্ব বলে গিয়েছেন, তাঁরা মানুষের কাছে ধর্মঘট ব্যর্থ করার আবেদন জানাবেন। তবে রাস্তায় নেমে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।
গত লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট কেন্দ্রে জয়ের পরে এই এলাকায় বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে গেরুয়া শিবির। উদ্বাস্তু ও মতুয়া অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে কার্যত বামেদের রক্ত শুষেই স্ফীত হয়েছে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে রানাঘাট মহকুমার বেশির ভাগ পুর এলাকায় এগিয়ে রয়েছে তারা। এই কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে তাহেরপুর, জেলার এক মাত্র বাম পরিচালিত পুরসভা। সেখানেও ভাল রকম পিছিয়ে রয়েছে বামেরা। বেশির ভাগ জায়গায় পিছিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও।
শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা এই ধর্মঘট সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। বামেরাই এর পুরোভাগে। সদ্য জেএনইউ-তে এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে মুখ ঢাকা এবিভিপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাতে হাওয়া আরও তেতেছে। ফলে আজ, বুধবার কোথাও-কোথাও বিজেপির সঙ্গে তাদের পাঞ্জা কষার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, ধর্মঘট সফল করতে বুধবার ভোর থেকেই পথে নামছে তারা। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জায়গায় ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়ে পদযাত্রা করা হয়েছে। বাজারে স্টেশনে বাসস্ট্যান্ডে প্রচার চালানো হয়েছে। সরকারি দফতরের সামনেও প্রচার হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দফতরে লিখিত ভাবে ধর্মঘটের নোটিসও দিয়েছে বামেরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সামনেও এসএফআই প্রচার চালিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে রানাঘাট শহরে মিছিল-পথসভা এবং রামনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মশাল মিছিল করে সিপিএম। সোমবার সন্ধ্যায় পায়রাডাঙাতেও মিছিল এবং পথসভা করা হয়েছে। ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ওই পথসভায় বক্তৃতা করেন। শান্তিপুর, ফুলিয়া ও বাদকুল্লার মতো একাধিক জায়গায় পথসভা হয়েছে।
সিপিএমের রানাঘাট ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক অলোককুমার দাস বলেন, “আমরা ময়দানে থাকব। ধর্মঘটে কেউ বাধা দিতে এলে সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করব।” একই কথা রানাঘাট এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিষ চক্রবর্তীর মুখেও। ডিওয়াইএফ-এর জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ স্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিরোধ হলে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ করব।” এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক মৌপ্রিয়া রাহা বলেন, “ধর্মঘটের সমর্থনে বুধবার সকালেই আমরা মিছিল করব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন জানানো হবে বন্ধ রাখার। তবে জোর করে বন্ধ করার পথে আমরা যাব না।” এ দিনের ধর্মঘট নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ বলছেন, ‘ঝামেলায় জড়াব না। দোকান বন্ধ রাখব’। আবার কেউ বলছেন, ‘এক দিনের ছুটি পাওয়া গিয়েছে। পিকনিক করে কাটিয়ে দেব’।
তবে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলছেন, “যে দাবি নিয়ে ধর্মঘট, মানুষ তা সমর্থন করছে না। মানুষই ধর্মঘট ব্যর্থ করে দেবে।” বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের কর্মীরা সংগঠিত ভাবে হোক বা নিজের মতো করে হোক, এই কর্মনাশা ধর্মঘটের বিরোধিতা করবেন। তবে অশান্তির পথে আমরা যাব না।”
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “আমরা বুধবার সকাল থেকেই রাস্তায় থাকব। শান্তিপূর্ণ ভাবেই ধর্মঘট পালন করা হবে। তবে কোথাও হামলা হলে আমরা চেষ্টা করব আমাদের মত প্রতিষ্ঠা করতে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy