ময়াল ধরে নিয়ে যাওয়া হল ছাড়তে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের দেখা মিলল ময়ালের।
গত বুধবারই ধুবুলিয়ার তালতা এলাকায় একটি বাড়ির রান্নাঘরে দেখা মিলেছিল ন’ফুট লম্বা ময়ালের। আর শনিবার রাতে একটি বাড়ির পিছনের ঝোপে পাওয়া গেল সাত ফুট লম্বা পূর্ণবয়স্ক ময়াল। দু’টিকেই বনকর্মীরা বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে পুকুরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় যুবক, সাপ ধরায় পটু দেবাশিস সেন জানাচ্ছেন, ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে বন দফতরের সঙ্গী হয়ে বেথুয়াডহরি আর ধুবুলিয়ার মধ্যে তিনি একাই ছ’টি ময়াল ধরেছেন। মোট উদ্ধার হয়েছে পনেরোটির মতো। তার মধ্যে নাকাশিপাড়ার ধর্মদা, কাঁঠালবেরিয়া, ডহখোলায় দু’টি করে, ধুবুলিয়ার বেলপুকুরে একটি, সম্প্রতি তাতলায় দু’টির দেখা মিলেছে।
কিন্তু এই এলাকায় বারবার এত ময়াল মেলার কারণ কী? সিঙ্গুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান দেবজ্যোতি চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা, বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যের পিছন দিয়েই বয়ে চলেছে গুড়গুড়ি খাল। যে সব অঞ্চলের সাপের দেখা মিলছে, সেগুলি সবই ওই খালের আশেপাশে। ময়াল জলা জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। জলপথে স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করে। জলের পাখি আর মাছই তাদের খাদ্য। ২০০০ সালের বন্যার সময়ে অনেক ময়াল জঙ্গল থেকে ভেসে এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে গিয়েছিল। সেগুলিরই কিছু খালের আশপাশে স্থায়ী ডেরা গেড়েছে বলে অনুমান করা যাচ্ছে। সারা বছর তেমন জল থাকলেও বর্ষায় গুড়গুড়ি যখন জলে ভরে উঠেছে, খাবারের সন্ধানে কিছু ময়ালের খাল বেয়ে চলে আসাটা বিচিত্র কিছু নয়।
বন দফতরের কৃষ্ণনগরের রেঞ্জ অফিসার বিকাশ বিশ্বাস জানান, ভারতীয় বন্যপ্রাণ রক্ষা আইন ১৯৭২ অনুযায়ী ময়াল বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। তাঁর আর্জি, ‘‘ময়াল দেখলে বা খবর পেলেই বন দফতর বা পুলিশকে জানান। তবেই এদের বাঁচানো যাবে।’’
মানুষই ভরসা বিপন্ন সাপেদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy