মুখ্যমন্ত্রীকে স্যালুট প্রধান শিক্ষক গিরীন্দ্রের। ফেসবুক ভিডিয়ো থেকে।
উপলক্ষ, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের স্কুলব্যাগ বিতরণ।
আর সেই উপলক্ষেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টেবিলে রেখে খুদেদের কাছে ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী’র গুণগান করতে দেখা গেল প্রধান শিক্ষককে। শেষে তিনি কপালে হাত ঠেকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘স্যালুট’ও জানান।
নদিয়ার হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের সেই দৃশ্য নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেছেন গিরীন্দ্রনাথ দাস নামে ওই প্রধান শিক্ষক, যাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে নামে শেষে ব্র্যাকেটে ‘ব্যানার্জি’ও লেখা রয়েছে। তাঁর নিজের পোস্ট করা ভিডিয়োয় (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) গিরীন্দ্রনাথকে বলতে শোনা যায়— “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তোমাদের মিড-ডে মিল খাওয়াচ্ছেন, ব্যাগ দিচ্ছেন, পোশাক দিচ্ছেন, জুতো দিচ্ছেন, কন্যাশ্রীর টাকা দিচ্ছেন, ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দিচ্ছেন, বিনা পয়সায় রেশনের চাল-ডাল দিচ্ছেন... এ রকম মুখ্যমন্ত্রী সারা ভারতে দূরস্থান, সারা পৃথিবীতে জন্মায়নি আর জন্মাবেও না।”
এই ভিডিয়ো দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেকেরই। নিন্দায়, কটাক্ষে, ক্ষোভে ভরে গিয়েছে শিক্ষকের দেওয়াল। কোনও শিক্ষক শিক্ষাঙ্গনে দাঁড়িয়ে এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মীর মতো কথা বলতে পারেন কি না, তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা পায় কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গিরীন্দ্র অবশ্য এক ফুঁয়ে সব উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমি কেয়ার করি না। যা করেছি, ঠিক করেছি।”
তাঁর যুক্তি, “সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা অপরাধ বা ভুল কিছু নয়। আমি তো ছাত্রছাত্রীদের বলিনি, তৃণমূল করো বা তৃণমূলকে ভোট দাও!” অথচ ওই ভিডিয়োতেই গিরীন্দ্রকে বাম জমানা প্রসঙ্গে বলতে শোনা যায়, “শিক্ষকেরা বেতন পাওয়া মাত্র ক্যাডাররা পকেট থেকে কেড়ে নিয়ে চলে যেত!” আবার কোনও এজেন্সির নাম না করেও তিনি বলেন, “দিদিকে বিরক্ত করছে, এ সব ঠিক নয়। এ সব করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হটানো যাবে না... দিদি, সামনের ভোটে রাজ্যের সব পঞ্চায়েত আপনি পেয়ে যাবেন।” বিনিময়ে তাঁর আর্জি, শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর আর প্রধান শিক্ষকদের ৭০ বছর করে দিতে হবে!
এবিটিএ-র নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য প্রভাস মজুমদার বলেন, "উনি তৃণমূলের কট্টর কর্মীর মতো কথা বলেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই আচরণ বাঞ্ছনীয় নয়।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক কমিটির সহ-সভাপতি তথা দাঁড়ের মাঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষের মতে, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে কোনও শিক্ষক এমন নির্লজ্জ চাটুকারিতা করতে পারেন, প্রথম দেখলাম।” তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির স্থানীয় নেতা অনুদেব মজুমদার অবশ্য মনে করছেন, “উনি সরকারের উন্নয়নের কথা বলে ভুল করেননি।” ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সনৎ সরকার বিস্তারিত খোঁজ না নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
নামের শেষে ব্র্যাকেটে ‘ব্যানার্জি’ কি মুখ্যমন্ত্রীরই অনুপ্রেরণায়?
গিরীন্দ্র বলেন, “আমার পূর্বপুরুষ ওই পদবি ব্যবহার করতেন। তাই ফেসবুকে নামের পাশে ‘ব্যানার্জি’ রেখেছি। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নামের কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy