Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Congress

‘দুর্গ’ দখলে মরিয়া কংগ্রেস, অন্তর্দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল

সামনের বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে জেলার কেন্দ্রগুলির কী অবস্থা? বিরোধীদের দাবি, নওদায় শাসকদলের জেলার তাবড় নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বসবাস হলেও তাদের বিভাজনটা বরাবরই  প্রকাশ্যে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মফিদুল ইসলাম 
নওদা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:২১
Share: Save:

আসন ধরে রাখতে মরিয়া সের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত নওদা। কংগ্রেসের সমর্থনে ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থী আবু তাহের খান। ২০০৬, ২০১১, ২০১৬ সালের নির্বাচনেও কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন তিনি। নির্বাচনে জেতার পর দল পরিবর্তন করে তৃণমুলে যোগ দেওয়ার পর আবু তাহের খানকে লোকসভায় প্রার্থী করে দল। ২০১৯ মে-তে নওদা বিধানসভা উপ নির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের চেয়ে ৩৩৮১৯ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হন সাহিনা মমতাজ খান। সাহিনা মমতাজ খানের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও তাঁর পরিবারের রাজনৈতিক গরিমাকে কাজে লাগায় দল। তাঁর শ্বশুর প্রয়াত নাসিরুদ্দিন খান ছিলেন চার বারের বিধায়ক এবং ১৯৭১ (উইনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) সালে তিনি কৃষি মন্ত্রীও ছিলেন। ফলে তার পক্ষেও ছিল জন সমর্থন। এদিকে কংগ্রেস ভেঙে শাসকদলে যোগ দিয়ে ইতিমধ্যে জেলা সভাধিপতি হন নওদার ভূমিপুত্র মোশারফ হোসেন, মুর্শিদাবাদ লোকসভার সাংসদ হন আবু তাহের। তাদের সঙ্গে বহু কর্মী সমর্থক শাসকদলের ছত্রছায়ায় আসে। ফলে ২০১৬'র বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে প্রায় ২০ হাজার ভোটে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ী হয় কংগ্রেস প্রার্থী তার তিন বছর বাদে একই আসনে ২০১৯ এর মে মাসের উপ নির্বাচনে প্রায় ৩৩৮১৯ ভোটে জয়ী হন সাহিনা মমতাজ। সাহিনা মমতাজের অন্যতম সেনাপতি ছিলেন মতিউর রহমান ওরফে মাতিন। মাস কয়েক আগে দল বদলে তিনি এখন কংগ্রেসে। কংগ্রেস নেতা কর্মীদেরও দাবি মাতিনের সঙ্গে বহু কর্মী সমর্থক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তা ছাড়া শাসকদলের অনেক জনপ্রতিনিধি তলায় তলায় কংগ্রেসের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। মতিউর রহমান ওরফে মাতিন বলছেন, ‘‘বিধানসভা উপ নির্বাচনে নওদার মানুষ তৃণমূলকে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব, স্বজনপোষণ ও দূর্নীতির কারণেই নওদার মানুষ শাসকদলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। প্রার্থী যেই হোক জিতবে কংগ্রেস।’’ অনেকেই মনে করছেন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন অধীর চৌধুরী এবং তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন অপূর্ব সরকার। ফলে একটা বড় অংশের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যায়। কিন্তু উপ নির্বাচনে সেই হিসেবটা অনেকটাই পালটে যায়।

বিরোধীদের দাবি, নওদায় শাসকদলের জেলার তাবড় নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বসবাস হলেও তাদের বিভাজনটা বরাবরই প্রকাশ্যে। খেলা থেকে দলীয় কর্মসূচি -মধুর সাথে তাহেরের বিভাজনটা স্পষ্ট। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও সম্প্রতি দু’জনের মতের অমিল প্রকাশ্যে চলে আসে। পরে মোশারফ দিদি-র হয়ে কাজ করবেন বললেও, সেই ক্ষত এখনও দল থেকে মিলিয়ে যায়নি বলে তৃণমূল সূত্রেই খবর।

জোট না হলেও হারানো মাটি ফিরে পেতে তৎপর কংগ্রেস। উপ নির্বাচনের কংগ্রেস প্রার্থী তথা দলের ব্লক সভাপতি সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধানসভা উপ নির্বাচন ছিল নির্বাচনের নামে প্রহসন এবং মেরুকরণের ভোট। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হলে নওদার মানুষ তার প্রমাণ দেবেন।’’

অন্যদিকে বিজেপির ভোট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ২০১৯ এর উপ নির্বাচনে বিজেপির সেই ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৩২,৩৭৩-এ। তা ছাড়া তৃণমূলের একটা বড় অংশের ভোট কংগ্রেস ও বিজেপির দিকেও কাটতে পারে বলে মত ভোট কুশলীদের। তবে বিধায়ক সাহিনা মমতাজ বলছেন, ‘‘দিদির উন্নয়ন দেখেই মানুষ তৃণমুল প্রার্থীকে জিতিয়ে আনবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Congress TMC Naoda West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy