Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Migrant Labourer

murder: মাটি খুঁড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ উদ্ধার

কাজের জায়গায় ফিরে তাঁর দুই সঙ্গী সহ খাওয়া দাওয়াও সারেন। তারপর থেকেই খোঁজ ছিল না তার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২৮
Share: Save:

আড়াই মাস পরে কেরলে কাজে যাওয়া সাগরদিঘির পরিযায়ী শ্রমিক অসিকুল ইসলামের মৃতদেহ উদ্ধার হল নির্মীয়মাণ বাড়ির শৌচাগারের মাটি খুঁড়ে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরই সঙ্গে কাজে যাওয়া পরেশ মণ্ডল নামে এক শ্রমিককে।

সাগরদিঘির মথুরাপুর গ্রামেই বাড়ি উভয়েরই। খুনে জড়িত ধৃতের শ্যালক গণেশ মণ্ডল এখনও পলাতক। তার বাড়ি জঙ্গিপুরের কুলগাছি গ্রামে। তিন জনেই একই সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন প্রায় ৭ মাস আগে। তারা কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল।

অসিকুলের নিজের ভাই মোমিনুল ইসলামও রয়েছেন কেরলেই। রয়েছে তাঁর খুড়তুতো ভাইও। কাজের জায়গা থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে ছিল অসিকুল সহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা জনা কুড়ি শ্রমিক।

তার ভাই মোমিনুল জানান, ২৮ জুন সকালে তার মালিকের কাছ থেকে মজুরি বাবদ ৩০ হাজার টাকা পায় অসিকুল। সেই টাকা থেকে তার দুই সঙ্গী পরেশ ও গণেশকে ৯ হাজার টাকা দেয়। পাশেই ব্যাঙ্কে গিয়ে বাড়িতে স্ত্রী জারিয়া বিবিকে পাঠান ১০ হাজার টাকা। এরপর তার মোবাইলটা সারাতে দেন পাশেই এক দোকানে। কাজের জায়গায় ফিরে তাঁর দুই সঙ্গী সহ খাওয়া দাওয়াও সারেন। তারপর থেকেই খোঁজ ছিল না তার। মোবাইলের দোকানেও যাননি অসিকুল।

এরপরই খবর পেয়ে ছুটে যান তাঁর ভাই। ইরিক্কুর থানায় নিখোঁজের ডায়েরিও করেন মোমিনুল। কিন্তু কোনও খোঁজ মেলেনি। এর পর ইরিক্কুর থানায় অভিযোগ জানান খুনের সন্দেহ প্রকাশ করে। পুলিশ অসিকুলের মোবাইল আটক করে কললিস্ট ধরে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরদিন পুলিশ তদন্তে অসিকুলের ডেরা ও কাজের জায়গায় যাবে বলে জানায়। এ কথা জানতে পেরেই অসিকুলের দুই সঙ্গী শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দোকানে চা খেতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে উধাও হয়ে যায়। তারপর থেকে তাদের মোবাইলও বন্ধ করে দেয় তারা। গত আড়াই মাস ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ওই দুই সঙ্গী। ইদানীং মোবাইল ব্যবহার করতে শুরু করে তারা। আর সেই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরেই কেরালার ইরিক্কুর থানার পুলিশ খোঁজ পায় তাদের মুম্বইয়ের এক গ্রামে।

কিন্তু পুলিশ সেখানে দিয়ে পরেশকে ধরতে পারলেও গণেশ পালিয়ে যায়। টানা জিজ্ঞাসাবাদ খুনের কথা কবুল করে পরেশ পুলিশের কাছে। সে জানায় মাটি খুঁড়ে দেহ পুঁতে দেওয়ার পর তার উপরে ঢালাই করে সিমেন্টের মেঝে বানিয়ে দিয়েছিল তারা। পুলিশের দাবি, ধৃত পরেশ জানিয়েছে তাদের মজুরি নিয়ে অসিকুলের সঙ্গে বচসা হয়। অসিকুলের কাছে প্রায় ১১ হাজার টাকা রয়েছে দেখতে পায় তারা। এরপর দুপুরে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া সেরে অসিকুল যখন সেখানেই ঘুমোচ্ছিল তখনই ঘুমন্ত অসিকুলের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে তারা।

স্ত্রী জারিয়া বিবি জানান, ২৮ জুন টাকা পাঠিয়ে ফোন করেন স্বামী অসিকুল। কথাও হয় তাঁর সঙ্গে। জারিয়া বলেন, ‘‘আমার স্বামী যে এভাবে খুন হতে পারেন তা ভাবতেই পারিনি। ওদের কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল আমার স্বামীই। তারাই কিনা এ ভাবে খুন করল স্বামীকে? স্রেফ টাকার লোভে এই খুন নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে তা খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি হোক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Labourer Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy