নিজস্ব চিত্র।
একটা সময় বহু দোকানেই লেখা থাকত— ‘ধার চেয়ে লজ্জা দেবেন না।’ সময় বদলে গেল। তার পরে লেখা হল— ‘আপনি সিসিক্যামেরার আওতায় আছেন।’ এ বার রীতিমতো সাদা কাগজে কালো হরফে লিখে দেওয়া হয়েছে—‘পেঁয়াজ চেয়ে লজ্জা দেবেন না।’ সেই নোটিস কোথায় সাঁটানো হয়েছে? বহরমপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নওদাপাড়া রেলগেট লাগোয়া একটি পাইস হোটেলে, ক্যাশ কাউন্টারের ঠিক পাশে।
যা দেখে অনেকেই বলছেন, ‘‘আগে হোটেলে ঢুকলেই না চাইতেই হাজির হয়ে যেত নুন, পেঁয়াজ, লেবু, লঙ্কা। কোনও অতিরিক্ত পয়সা লাগত না। এখন এমন দিনও দেখতে হচ্ছে!’’
বুধবার ওই হোটেলের মালিক বাবুলাল দে বলছেন, ‘‘কী কবর বলুন? গত সপ্তাহ থেকে পেঁয়াজ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। এ দিনও ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছি। ফলে রান্নার কাজে ছাড়া পেঁয়াজ দেওয়া যাচ্ছে না। তাই কেউ চাওয়ার আগেই নোটিস সাঁটিয়ে দিয়েছি।’’
জাতীয় সড়ক লাগোয়া ওই হোটেলে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ লোকজন খাওয়াদাওয়া করেন। প্রতিদিন প্রায় ২৫ কেজি করে পেঁয়াজ লাগত। কিন্তু দাম বাড়তেই পেঁয়াজের ব্যবহার এখন আট কেজিতে নেমে এসেছে। বাবুলাল বলছেন, ‘‘গরম ভাতের থালায় কিংবা তরকা-রুটির সঙ্গে এত দিন পেঁয়াজ লঙ্কা, শশা দিতেই হত। এখন শশা কিংবা মুলো দিয়ে মেকআপ দিচ্ছি। অনেকে এতে বিরক্ত হচ্ছেন। কিন্তু কিছু করার নেই।’’
বাবুলাল একা নন, তাঁর মতো অনেকেই পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাজেহাল। ফরাক্কার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশের এক হোটেল মালিক মনোজ সাহা বলছেন, ‘‘প্রতিদিন ২০ কেজি করে পেঁয়াজ লাগত। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে তা কমিয়ে ৭-৮ কেজিতে নামিয়ে এনেছি। কেউ পেঁয়াজ চাইলে মুলো ও লঙ্কা দিচ্ছি। অনেকের সঙ্গেই কথা কাটাকাটি হচ্ছে। ভাবছি, আমরাও এ বার নোটিস সেঁটে দেব।’’
পেঁয়াজ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিল বেশ কয়েক দিন আগে। তার পর থেকে ১১০, ১২০ করতে করতে বুধবার হরিহরপাড়া-সহ বেশ কিছু জায়গায় ১৫০ টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিকিয়েছে। যা শুনে হরিহরপাড়ার এক চপ বিক্রেতা বলছেন, ‘‘এ বার আপনারাই বলুন, আগে যে দামে পেঁয়াজি বিক্রি করতাম এখন কি সেই দামে আর পেঁয়াজি বিক্রি করা সম্ভব?’’
ঝালমুড়ির দোকানে গেলেও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ‘চাইলে শশা দিতে পারি।’ ঘুগনির দোকানেও ছবিটা কমবেশি একই রকম। নুন আছে, লঙ্কাকুচি আছে। কিন্তু পেঁয়াজ চাইলেই শুনতে হচ্ছে— নেই! ডিমটোস্টে পেঁয়াজ দিলে কেউ কেউ দামও কিঞ্চিৎ বেশি চাইছেন। শহরের এক ওমলেটপ্রেমী আবার রীতিমতো ক্ষুব্ধ, ‘‘বাজারের কথা আর কী বলব, বাড়িতে ওমলেট চাইলেও পোচ মিলছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy