প্রতীকী ছবি।
তখন বাম আমল। প্রায় ১৪ বছর আগের কথা। সে সময় নদিয়ার পলাশি লাগোয়া মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে শিল্পতালুক গড়ে তোলে রাজ্য সরকার। প্রথম থেকেই সেখানে জল থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল রয়েছে। তা সত্ত্বেও গত ১৪ বছরে খান চারেক ইউনিট ছাড়া সেখানে কোনও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরেও এই শিল্পতালুক কেমন করে সাফল্যের মুখ দেখতে পারে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎপর হয়েছেন। কিন্তু এতদিন সাফল্য না পেলেও এবারে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে কিছুটা আশার আলো দেখা গিয়েছে। সেখানে ঠিক হয়েছে এ বারে রেজিনগরের এই শিল্পতালুকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে চলেছে। ‘কৌশিস ই মোবিলিটি প্রাইভেট লিমিটেডে’ নামে একটি সংস্থা সেখানে ই বাস কারখানা গড়ার জন্য রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে।
যার জেরে খুশির হাওয়া মুর্শিদাবাদ জুড়ে। গত সপ্তাহে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে সেখানে কারখানার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। বাণিজ্য সম্মেলন শেষ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার এবিষয়ে জেলায় বৈঠক করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। শিল্প উদ্যোগী থেকে শুরু করে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রি ডেভলপ্টমেন্ট কর্পোরেশনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিল্প উদ্যোগীরা। মুর্শিদাবাদ জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার তন্ময় ব্রহ্ম বলেন, ‘‘ই বাস কারখানা হলে সেখানে হাজার চারেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। যার জেরে জেলার মানুষের উপকার হবে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ২০০৮ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রেজিনগরে ১৮৭ একর জমির উপরে শিল্পতালুকের শিলান্যাস করেন। এই শিল্প তালুকের দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্যের সংস্থা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন’কে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া, রেজিনগর স্টেশনের অনতি দূরে এই শিল্পতালুক গড়ে উঠেছে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, সেখানে জল, বিদ্যুতের বন্দোবস্ত রয়েছে। কারখানার জন্য ১১২ একর জমি ব্যবহার করা যাবে। ওই জমিতে বিভিন্ন পরিমাপের ৩০৭টি তৈরি প্লট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৬৭টি প্লট বিলি করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাস কারখানার প্লট ধরলে ২৬৮ টি প্লট বিলি হবে। বিলি করতে বাকি রয়েছে ৩৯টি প্লট।
এত প্লট বিলি হলেও অধিকাংশ প্লট পড়ে রয়েছে। অথচ রেজিনগর স্টেশনের কাছাকাছি ছাড়াও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে হওয়ায় এই শিল্প তালুকের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল। এ ছাড়া জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ভাল থাকলেও উদ্যোগীরা রেজিনগর শিল্পতালুকমুখী হননি। যার জেরে এখনও খাঁ খাঁ করছে এই শিল্পতালুক। তবে গত মার্চে এবং এপ্রিলের গোড়ায় কৌশিস ই মোবিলিটি প্রাইভেট লিমিটেডের লোকজন দু'দফায় রেজিনগর শিল্প তালুকের জমি দেখে গিয়েছেন। সেখানেই তাঁদের বিদ্যুৎ চালিত বাসের কারখানা গড়ার জন্য জমি দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সব সময় আমাদের জেলার উপর নজর রয়েছে। সে জন্য তিনি যেমন লাগাতার উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছেন, তেমনই এ বারে রেজিনগর শিল্পতালুকে কারখানা গড়ার ব্যবস্থা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy