পাঁচশোর নোটেও বিকোচ্ছে টিকিট। করিমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
নোট নাকচের পর ভিন্ন পথে হেঁটেছিল করিমপুর। বাতিল ঘোষণার পরও এখানকার রাসের মেলায় নেওয়া হয়েছিল পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট।
১০০০ টাকার নোট বাতিল হয়েছিল আগেই। বৃহস্পতিবার মাঝ রাত থেকে সরকারিভাবে সারা দেশে ৫০০ টাকার নোট ব্যবহারও নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। এমন অবস্থায় আবারও বিপরীত পথে হাঁটল করিমপুর। এলাকার একটি নাট্যোৎসবের উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা পুরনো ৫০০ টাকার নোটে টিকিট বিক্রি করবে। এই ঘোষণায় সাড়াও পড়েছে বিস্তর। বিক্রি হচ্ছে সিজন টিকিট। উদ্যোক্তাদের দাবি, অনেকেই টাকার জন্য টিকিট কাটতে পারবেন না বুঝেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা না হলে নাট্যপ্রেমিরা বঞ্চিত হতেন।
উদ্যোক্তাদের এমন সিদ্ধান্তে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। নোটের চোটে এই জেলাতেই হোঁচট খেয়েছে নাট্যোৎসব। সেখানে করিমপুরের মতো প্রান্তিক এলাকার উদ্যোক্তাদের এমন সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রমী তো বটেই।
করিমপুরের শরৎ স্মৃতি নাট্য সংস্থা ২০ বছর ধরে আয়োজন করছে আন্তর্যাতিক নাট্যোৎসবের। ১৯ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে ২১তম আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব। পাঁচ দিনের এই উৎসবে বাংলাদেশ এবং কলকাতার মোট পাঁচটি নাটক মঞ্চস্থ হবে। পাঁচ দিনের জন্য আমন্ত্রণ পত্রের দাম রাখা হয়েছে আড়াইশো টাকা। উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন নোট না থাকলে বাতিল ৫০০ টাকার নোটেই তাঁরা আমন্ত্রণ পত্র বলি করবেন। টিকিট কাটলে খুচরো ফেরত পাবেন অবশ্য চালু নোটেই।
কেন এমন উদ্যোগ? জবাবে সংস্থার সভাপতি দেবপ্রসাদ স্যান্যাল জানালেন, করিমপুর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি গঞ্জ এলাকা। এখানে বিনোদন মানে টিভির ধারাবাহিক। নাট্যোৎসব সেখানে এক ঝলক টাটকা বাতাসের মতো। বহু মানুষ এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘নতুন নোট মানুষ সংসার খরচের জন্য তুলে রাখছেন। তাই আমরা বাতিল নোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ হিসেব বলছে, এই ঘোষণার পর টিকিট বিক্রি হচ্ছে হুড়মুড়িয়ে।
এ বছরের বাজেট প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। সেই জন্য পাকা ব্যবস্থাও করে ফেলেছেন তাঁরা। সংস্থার নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমন্ত্রণ পত্র থেকে সংগৃহীত টাকা সেই অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। নাটকের দল থেকে শুরু করে ডেকরেটর— সবাইকে চেকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজি হয়েছে তাঁরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy