Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Paddy field

ক্রয় বাড়িয়েও রোখা যায়নি ফড়ে

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় আউস, আমন, বোরো মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। এ বছর জেলার যে অংশে বন্যা হয়েছিল সে অংশে ধান চাষ কম হয়েছে। তাতে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। এ বছর প্রায় ৮ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হতে পারে। সেখানে খাদ্য দফতর সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিকটন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২১
Share: Save:

একজন কৃষকও যেন অভাবি বিক্রি না করেন—সহায়ক মূল্যে ধান কেনার বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমনই নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু কৃষকদের অভিজ্ঞতা বলছে, সরকারি নির্দেশিকার ফাঁক-ফোকর গলে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে ফড়েরাজ অব্যাহত। জেলার একাধিক কৃষক সংগঠনের অভিযোগ, খোলা বাজারে ধানের দাম ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। দালালরা সেই ধান কিনে কৃষকদের নামে সরকারকে কুইন্টাল প্রতি ১ হাজার ৮১৫ টাকায় বিক্রি করছে। কিন্তু সরকার দেরি করায়, কৃষকরা খোলা বাজারে বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যেমন বড়ঞা ব্লকের কৃষক বাজারে সাত হাজার চাষি ধান বিক্রি করার জন্য নাম লিখিয়েছেন। সেখানে নিয়মিত ভাবে ১১০ জনের বেশি চাষির কাছ থেকে ধান নেওয়া হচ্ছে। তাতেও মাত্র দুই হাজার চাষির কাছ থেকে ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি খাদ্য দফতরের। জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধন পাঠক বলেন, “সকাল থেকে চাষিদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা, ট্রাকে তোলা সব মিলিয়ে সময় সাপেক্ষ কাজ। ফলে একটু দেরি হচ্ছে। তবে আমরা সকল চাষির কাছ থেকেই ধান নেব। কোনও চাষিকে আমরা বঞ্চিত করব না।” জেলা খাদ্য দফতর থেকে কৃষি দফতরের কর্তারা ফড়েরাজের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় আউস, আমন, বোরো মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। এ বছর জেলার যে অংশে বন্যা হয়েছিল সে অংশে ধান চাষ কম হয়েছে। তাতে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। এ বছর প্রায় ৮ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হতে পারে। সেখানে খাদ্য দফতর সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিকটন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।

তবে মাঠ থেকে ধান উঠতে নভেম্বর, ডিসেম্বর হয়ে যায়। এ বারেও জেলায় ধান কেনা শুরু হতে ডিসেম্বর হয়ে গিয়েছে। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর গত বছরও জেলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিকটন। কিন্তু বাস্তবে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৩২২ জন কৃষকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। ধান কেনা বাড়ানোর ফলে ফড়েদের দাপট কমবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরও সাড়ে তিন লক্ষ ছিল, কিন্তু তা ছোঁয়া যায়নি।

সিপিএমের কৃষক সভার জেলা সম্পাদক আবু বাক্কার সরাসরি অভিযোগ করছেন, ‘‘কৃষকরা সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সুযোগ না পেয়ে ফড়েদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের কাছ থেকে সেই ধান কম দামে কিনে, সরকারের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছে।’’ একই অভিযোগ তুলেছে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তিনি বলছেন, ‘‘সরকার মুখে কৃষকের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কথা বলছে। কিন্তু কৃষকরা ধান বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন না। তাঁরা দালালদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।’’

যদিও তৃণমূল পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগম অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওদের অভিযোগ ঠিক নয়। কোনও কৃষক এ ধরনের অভিযোগও করেননি।’’ জেলা খাদ্য নিমায়ক সাধনবাবুও অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, ‘‘অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Paddy field Farmers Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy