তৃণমূলের সাংবাদিক সম্মেলনকে ঘিরে বিতর্ক। — নিজস্ব চিত্র।
সরকারি প্রকল্প নিয়ে তৃণমূল দলীয় ভাবে কেন সাংবাদিক সম্মেলন করবে, তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এ ভাবে আসলে সরকার ও দলকে এক করে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে শাসক দল এ ভাবে সরকারের ‘দলীয়করণ’ করছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরে জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আর রানাঘাটের বিনয় ভবনে তৃণমূলের নদিয়া উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার তরফে সরকারি পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্প নিয়ে যথাক্রমে দু’টি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এক দিকে যেমন সরকারি প্রকল্প নিয়ে দলীয় ভাবে তৃণমূলের সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, তেমন অন্য দিকে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক তৃণমূল নেতার অনুপস্থিতি নিয়েও রাজনৈতিক স্তরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
গোটা রাজ্য জুড়ে রাস্তাশ্রী প্রকল্পে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও তেহট্ট মহকুমার ২০১ কিলোমিটার ও রানাঘাট এবং কল্যাণী মহকুমার প্রায় ১৩৯ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হবে। ২৮ মার্চ রাস্তাশ্রী প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সেই রাস্তাশ্রী প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল নেতারা। নদিয়ায় কোথায় কত কিলোমিটার রাস্তা হবে, কত খরচ হবে, তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “সরকারি কর্মসূচি কেন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে দলীয় নেতারা ঘোষণা করবেন? তৃণমূল আসলে সরকারের অস্তিত্ব রাখেনি। সরকারকে দলে পরিণত করছে।’’ আবার রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘সিপিএমের জামানায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পার্টি অফিস থেকে সরকার পরিচালনা করা হত। তৃণমূল জামানায় তারই পুরনাবৃত্তি ঘটছে। যে বিশয়গুলি সরকারি আধিকারিকদের দেখার কথা তা নিয়ে তৃণমূল নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন করছেন!’’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র বাণীকুমার রায় অবশ্য বলেন, “ইতিমধ্যেই সরকারি ভাবে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা শুধু দলের তরফে সেই সরকারি প্রকল্পকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেছি। বিজেপি আর সিপিএম বরং সরকারকে দলের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে অভ্যস্ত।”
তবে দু’টি সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক দলীয় নেতার অনুপস্থিতি তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাংবাদিক সম্মেলনে টিনা ভৌমিক সাহা উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহাকে। তিনি জানিয়েছেন, এ দিন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত থাকতে হয়েছে। আবার নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ এ দিন কলকাতায় ধর্নামঞ্চে ছিলেন বলে আসতে পারেননি।
রানাঘাটের বিনয় ভবনেও সাংবাদিক সম্মেলনেও গড়হাজির ছিলেন দলের একাধিক নেতা। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী, নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা, নদিয়া জেলা পরিষদের মেন্টর বাণীকুমার রায়, রানাঘাটের প্রাক্তন সংসদ তথা তৃণমূলের এসসি-ওবিসি সেলের রাজ্য সম্পাদক তাপস মণ্ডল ছিলেন না। ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, ‘‘রামনবমী থাকার কারণে নিজের বিধানসভা এলাকায় কয়েকটি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।”
আবার বাণীকুমার রায় বলেন, ‘‘কৃষ্ণনগরের সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলাম বলে রানাঘাটে থাকতে পারিনি।’’ তৃণমূলে রানাঘাট জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘যাঁরা আসতে পারেননি তাঁরা দলের অন্য কাজে বা ব্যক্তিগত কোনও জরুরি বিষয়ে ব্যস্ত ছিলেন। দলে কোনও দ্বন্দ্বনেই।” নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy