Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজ্যপালের পাশে ‘একা’ অরিন্দমই

দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের তীব্র টানাপোড়েন আড়ালে নেই। বরং পারস্পরিক মতানৈক্য, বাদানুবাদ কার্যত নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

তাঁতশিল্পী বীরেন বসাকের বাড়িতে শাড়ি দেখছেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। মঙ্গলবার ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

তাঁতশিল্পী বীরেন বসাকের বাড়িতে শাড়ি দেখছেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। মঙ্গলবার ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

সম্রাট চন্দ 
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২১
Share: Save:

অন্য কোনও তৃণমূল নেতা নেই, রাজ্যপালের শান্তিপুর-সফরে তাঁর পাশে একটানা শুধু রইলেন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বাড়ির রাস উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে তাঁরা শুধু এক মঞ্চে থাকলেন তাই না, প্রকাশ্যে রাজ্যপালের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন অরিন্দম। অনুষ্ঠান চলাকালীন দু’জনকে একাধিক বার একান্তে কথা বলতে দেখা গেল, এবং অনুষ্ঠান শেষে রাজ্যপাল সস্ত্রীক ফুলিয়ার শাড়ি কিনতে যাওয়ার সময়েও সঙ্গী হলেন অরিন্দম।

দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের তীব্র টানাপোড়েন আড়ালে নেই। বরং পারস্পরিক মতানৈক্য, বাদানুবাদ কার্যত নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কখনও সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁকে নিমন্ত্রণ না-করা বা নিমন্ত্রণ করেও ব্রাত্য রাখার অভিযোগ এনেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আবার কখনও তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব এবং বিজেপি-ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ এনেছে তৃণমূল।

এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে কার্যত এড়িয়েই চলছেন শাসক দলের নেতারা। তাঁর অনুষ্ঠানে সাধারণত শাসক দলের কোনও নেতা থাকছেন না। শান্তিপুরেও পুরপ্রধান অজয় দে থেকে শুরু করে প্রায় কোনও তৃণমূল নেতাই এ দিন রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ব্যতিক্রম শুধু অরিন্দম। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক জল্পনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন তিনি। অরিন্দম বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন এমন সম্ভাবনার কথা সকলের মুখে মুখে ঘুরছে। অরিন্দম নিজে অবশ্য বলেছেন, ‘‘ওটা রাজ্যপালের অনুষ্ঠান নয়, রাসের অনুষ্ঠান। সেই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম এবং আমাকে সেখানে থাকতে কেউ বারণ করেননি।’’ রাজ্যপালের পা ছুঁয়ে প্রণাম এবং তাঁর সঙ্গে শাড়ির দোকানে যাওয়া সম্পর্কে অরিন্দমের মন্তব্য, ‘‘আমি সৌজন্যতা দেখিয়েছি।’’

মঙ্গলবার শান্তিপুরের বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বাড়ির রাস উৎসবের সুচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকারও। তবে তৃণমূলের পুরপ্রধান অজয় দে বা অন্য কোনও নেতাকে দেখা যায়নি সেখানে। মঞ্চে অরিন্দম রাজ্যপালকে প্রণাম করলে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন রাজ্যপাল।

পরে বক্তব্য রাখার সময়েও রাজ্যপাল বিধায়কের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এক সময়ে আমরা দু’জনেই একই নৌকায় পা রেখেছিলাম। কিন্তু পরে আমি আর আইনের পেশায় যাইনি, আমি এখন রাজ্যপাল।’’ প্রসঙ্গত, এর আগে স্বাধীনতা দিবসের দিন এক অনুষ্ঠানে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে অরিন্দমকে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল।

শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে-র সঙ্গে বরাবরই অরিন্দমের দূরত্ব রয়েছে। অজয় দে এ দিন বলেন, “আমি নিমন্ত্রিত ছিলাম না। আর হলেও রাজ্যপালের সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ, আমরা মনে করছি প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে রাজ্যপালের ভূমিকা ঠিক নয়। তিনি সব ব্যাপারেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। সেখানে একই মঞ্চে বিধায়কের উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত। কেউ যদি এমন ঘটনা দিনের পর দিন ঘটাতে থাকেন তা হলে আমাদেরও ভাবতে হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Shantipur Governor TMC Mamata Banerjee Jagdeep Dhankhar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy