Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

কার্তিকের বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল আলপনা

শুক্রবারও তার জের ধরে রাখল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের আকাশ। দিনভর দুই জেলা যে ভেলকি দেখল, তা সামলানো তো দূরের কথা, চারদিকে সামাল সামাল রব।

রাতারাতি ফিকে হল আলপনা। বহরমপুরে।— নিজস্ব চিত্র।

রাতারাতি ফিকে হল আলপনা। বহরমপুরে।— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৮
Share: Save:

পূর্বাভাস ছিল আবহাওয়া দফতরের।

আকাশে খাপছাড়া স্লেট-রঙা মেঘের আনাগোনাও ছিল। তবে শ্যামাপুজোয় আবার বৃষ্টি হয় নাকি! স্মৃতিতে তেমন নজিরের খোঁজ না পেয়ে বুক বেঁধেছিলেন সকলেই।

শেষ শরতে আবহাওয়া দফতরই জিতে গেল। ছাদ জুড়ে আতস এবং শব্দবাজির রোদপোড়া শরীরগুলো তেমন ঝাঁঝালো হল না। বৃষ্টি এসে ভাসিয়ে দিল বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যেয়।

শুক্রবারও তার জের ধরে রাখল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের আকাশ। দিনভর দুই জেলা যে ভেলকি দেখল, তা সামলানো তো দূরের কথা, চারদিকে সামাল সামাল রব। মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের। ভিজে চুপসে গিয়েছে ভাইফোঁটার বাজারও।

সারা রাত জেগে বহরমপুরের ক্যান্টনমেন্ট রাস্তার উপরে ফৌজদারি কোর্ট সান্ধ্য বাজার থেকে টেক্সটাইল কলেজ পর্যন্ত প্রায়য় তিনশো ফুট রাস্তা জুড়ে আলপনা এঁকেছিল এমজিওয়াইএসএফ পুজো কমিটি। বৃষ্টিতে সে আলপনা ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি ও বাতাসের দাপটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের মণীন্দ্রনগর এলাকায় তরুণ সঙ্ঘের প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার কালীপ্রতিমা ভেঙে পড়ে। শুক্রবার সকাল থেকে ফের টানা বৃষ্টিতে জিয়াগঞ্জের বাগডহরেও ভেঙে পড়ে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার প্রতিমা। পণ্ড হয়ে গিয়েছে বহু পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বহরমপুরের ক্যান্টনমেন্ট ইংয়সম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা অলোক নাথ জানান, মাঠে জল জমে গিয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে। পুরোহিত মশাই ভিজে ভিজে এসে কোনও রকমে পুজো করছেন। বৃষ্টিতে সব আনন্দ ধুয়ে দিল।

নদিয়াতেও কোথাও ভিজে গিয়ে রং হারিয়েছে মণ্ডপ। খসে পড়ছে থার্মোকলের কাজ। কোথাও আবার পড়ে গিয়েছে আলোর গেট। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা। কৃষ্ণনগরের সুমনা সরকার বৃষ্টির মধ্যে বাড়িতে বসে বিরক্ত মুখে বলছেন, ‘‘উৎসব এলেই যেন বৃষ্টি আসতে হবে। দুর্গাপুজোটা মাটি হয়েছিল। এবার কালীপুজোতেও এক অবস্থা। জগদ্ধাত্রী পুজোতে বৃষ্টি হলেই ষোলো কলা পূর্ণ হয়।’’

দিন কুড়ি আগে থেকে দিনরাত এক করে মণ্ডপ তৈরি করেছিল করিমপুরের আলোকবর্ষ ক্লাব। বৃহস্পতিবার রাত থেকে মনখারাপ ক্লাবের ছেলেদের। বৃষ্টিতে মণ্ডপের সামনে জল জমেছে। সম্পাদক অনিমেষ প্রামাণিক বলছেন, ‘‘সব মাটি হয়ে গেল।’’ রেগুলেটেড মার্কেটের ভিতরে জমা জলে নিঃসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রেললাইনের আদলে তৈরি মণ্ডপটি।

একই রকম অবস্থা জেলা সদর কৃষ্ণনগরেও। শহরের একটি অন্যতম বড় কালী পুজো করে পাত্রবাজারের কাছে ক্লাব নবজাগরণ। একেবারে জনবহুল এলাকায় রাস্তার ধারেই এই মণ্ডপকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ থাকে বরাবর। ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক প্রসূন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত কষ্ট করে চাঁদা তুলে মণ্ডপটা করলাম। সবই বৃষ্টিতে ভেসে গেল!’’

অন্য বিষয়গুলি:

rain Kalipuja Disruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy