Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

খাদ বুজিয়ে গতি হল ছাইয়ের

গত দু’বছরে একের পর এক ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এনটিপিসি আবাসন লাগোয়া বীরনগর গ্রাম। প্রায় ৮০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল খাদ তৈরি হয়েছে সেখানে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে শ’দুয়েক পরিবার।

এনটিপিসি-র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

এনটিপিসি-র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

ছাইচাপা কপাল অবশেষে খুলল! তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পেয়ে স্বস্তি পেল গ্রাম। আর ছাই দিতে পেরে হাঁফ ছাড়লেন এনটিপিসি-র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তারা।

গত দু’বছরে একের পর এক ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এনটিপিসি আবাসন লাগোয়া বীরনগর গ্রাম। প্রায় ৮০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল খাদ তৈরি হয়েছে সেখানে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে শ’দুয়েক পরিবার। সেই খাদ বুজিয়ে সেখানে ফের ঘর তোলা বড় ঝক্কির কাজ।

সেই ঝক্কি ঘাড়ে নিয়ে কার্যত ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারল এনটিপিসি। সংস্থার ‘সিএসআর’ (কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটি) প্রকল্পে গ্রামোন্নয়নের কাজও হল, আবার গতি হল পাহাড়প্রমাণ ছাইয়েরও। এনটিপিসি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, নিশিন্দ্রার ছাইগাদা থেকে ওই বিপুল পরিমাণ ছাই পরিবহণের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা খরচও তারাই বহন করবে। বুধবারই সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অরবিন্দকুমার সিংহের উপস্থিতিতে সেই কাজ শুরু হয়েছে।

ছ’টি ইউনিটে ২১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১০.৬ মিলিয়ন টন কয়লা পুড়িয়ে প্রতি বছর প্রায় ৩৬ লক্ষ মেট্রিক টন ছাই উৎপন্ন হয় ফরাক্কা প্ল্যান্টে। গত ৩০ বছর ধরে চলা ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ছাইগাদা মাস চারেক আগেই ভরাট হয়ে উপচে গিয়েছে। ফলে বেড়েছে বিপদের আশঙ্কাও। তৃতীয় ছাইগাদা নির্মাণের কাজও আটকে রয়েছে।

এ বার কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন এনটিপিসি কর্তারা। তাই বীরনগর গ্রামে গঙ্গা ভাঙনের ফলে সৃষ্ট খাদ ভরাটের জন্য সেই ছাই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা কার্যত লুফে নিয়েছেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ। তাঁদের হিসেবেই, এর ফলে অন্তত ৮.৪ লক্ষ মেট্রিক টন ছাই সরিয়ে ফেলার সুযোগ পাওয়া গিয়েছে।

ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পূবারুণ টাউনশিপ লাগোয়া বীরনগর গ্রামে গত দুই বর্ষায় গঙ্গার ভাঙনে শ’দুয়েক বাড়ি ক্ষতির মুখে পড়ে। প্রায় ৮০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয় বিশাল খাদ। গঙ্গার পাড় বাঁধানো হলেও সেই খাদ ভরাট হয়নি। ফলে গৃহহারা পরিবারগুলির পুনর্বাসন সম্ভব হচ্ছিল না।

ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শৈবাল ঘোষ জানাচ্ছেন, হিসেব কষে দেখা গিয়েছে, ওই গভীর খাদ ভরাট করতে অন্তত ৮.৪ লক্ষ মেট্রিক টন ছাই প্রয়োজন হবে। তার সবটাই পাঠানো হবে নিশিন্দ্রার ছাইগাদা থেকে। তবে এটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও এখান থেকেই বিপুল পরিমাণে ছাই নিয়ে গিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ফোর লেন করার আগে গর্ত ভরাটের কাজে লাগানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

NTPC Farakka thermal power plant Ash civilization
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE